Lifan KPR 165R কার্বুরেটর ১১০০০ কিঃমিঃ রাইডিং রিভিউ

Humyra Sharmind Alam
time
5 মিনিটে পড়া যাবে
feature image

আসসালাম আলাইকুম সবাইকে। আমার নাম তানজিনা বিথী। আমি বিগত ৩ বছর ধরে বাইকিং করছি। স্পোর্টস বাইক আমার সবসময়ই পছন্দ ছিলো। আজ আমি আমার জীবনের প্রথম স্পোর্টস বাইক Lifan KPR 165R কার্ব ভার্সন চালানোর অভিজ্ঞতাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।আমি এই বাইকটি ১ বছরে এখন পর্যন্ত ১১,০০০ কিলোমিটার চালিয়েছি। এই অল্প সময়ে Lifan KPR 165R বাইকটি নিয়ে আমার ভাল মন্দ নানা ধরণের অভিজ্ঞতা হয়েছে। আরো এক বছর এটা চালানোর ইচছা আমার আছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে লিফান কেপিআর ১৬৫আর বাইকটির ভালো ও খারাপ কিছু দিক নিয়ে আমার লিফান কেপিআর রিভিউ আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

যে কারণে Lifan KPR 165R কার্বুরেটর বাইকটি কিনলাম

আমার বাড়ি চট্টগ্রাম। বাবা বাসার কাছেই ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকতেন। সেই সুযোগে আমরা দুই ভাই বোন বাবার বাইক নিয়ে চালানোর চেষ্টা করতাম। বাইকের প্রতি ভালোবাসাটা তাই অল্প বয়স থেকেই। বাবা মারা যাওয়ার পর ভাইয়ার নিজের বাইক থাকায় আমি বাবার পুরাতন বাইকটা চালানো শুরু করলাম। কিন্তু ভাইয়ার স্পোর্টস বাইক আমাকে সব সময়ই টানতো। তাই আস্তে আস্তে সেভিংস শুরু করলাম। ভেবেছিলাম হয়ত স্বপ্নের স্পোর্টস বাইক কিনতে অনেক সময় লেগে যাবে। কিন্তু যখন দেখলাম লিফান মোটরসাইকেলের দাম বেশ সাধ্যের মধ্যেই, তখন পরিচিত এক ভাইয়ের লিফান কেপিআর ১৬৫আর মোটরসাইকেলটি চালিয়ে দেখলাম। অসম্ভব ভালো থ্রটল রেসপন্স আর এক্সিলারেশন দেখে আমি রীতিমত ফ্যান হয়ে গেলাম। সবশেষে আউলুক এবং বেশ ভালো রিভিউ দেখে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম Lifan KPR 165R কার্বুরেটর বাইকটিই হবে আমার স্বপ্নের স্পোর্টস বাইক।

Lifan KPR 165R বাইকটির যত ভালো দিক

প্রথমেই লিফান কেপিআর ১৬৫আর বাইকটির যা কিছু আমার কাছে ভালো লেগেছে সেই জিনিসগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। নিচে Lifan KPR 165R কার্ব ভার্সন বাইকটির ভালো দিক তুলে ধরছিঃ

লিফান কেপিআর রিভিউঃ দামের দিক থেকে সেরা স্পোর্টস বাইক

আমাদের দেশে স্পোর্টস বাইক কেনা মানে বিশাল বড় বাজেটের ব্যাপার। কিন্তু লিফান কেপিআর ১৬৫আর কার্ব মোটরসাইকেলটির দাম আমাদের দেশে মাত্র ২,০০,০০০ টাকা। এই দামের মধ্যে অসাধারণ কোয়ালিটিসম্পন্ন এবং দারুণ পারফরম্যান্স আমাকে দিয়েছে Lifan KPR 165R কার্বুরেটর।

লিফান কেপিআর রিভিউঃ স্পোর্টি আউটলুক ও ডিজাইন

লিফান কেপিআর ১৬৫আর বাইকটির আউটলুক বাকি সব লিফান মোটরসাইকেলের মতই দারুণ এগ্রেসিভ। তাদের সবগুলো বাইকের ডিজাইন সবার নজর কাড়ে আর আউটলুক সম্পূর্ণ স্পোর্টস বাইকের। Lifan KPR 165R এর ৩ টা ভিন্ন কালার অপশন থেকে আমি বেছে নিয়েছি ব্ল্যাক এবং রেড কম্বিনেশনটি।

লিফান কেপিআর ১৬৫আর রিভিউঃ মসৃণ ব্রেক ও কন্ট্রোল

সামনে ও পিছনে দুই পাশেই ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার হওয়ায় আমার লিফান মোটরসাইকেলটির ব্রেক অসাধারন। লিফান কেপিআর ১৬৫আর-এর পিছনে ১৩০ সেগমেন্টের CST টায়ার রাইডিং-এ দারুণ কমফোর্ট দেয়। ১২০ স্পিডে ও হাইওয়েতে Lifan KPR 165R বাইকটির কন্ট্রোল এতটাই ভালো যে আমার মত একজন নতুন বাইকারও বেশ আত্মবিশ্বাস পেয়েছি।

লিফান কেপিআর রিভিউঃ দ্রুতগতির শক্তিশালী ইঞ্জিন

লিফান কেপিআর ১৬৫আর কার্ব বাইকটিতে রয়েছে লিকুইড কুলিং সহ NBF2 ইঞ্জিন; ফলে এর ক্লাচ ও গিয়ার অনেক মসৃণ। রেডি পিকআপ বেশি থাকার কারণে স্পিড তুলতে কোন সমস্যা হয় না। Lifan KPR 165R-এর ব্রেক ইন পিরিয়ড অর্থাৎ প্রথম ২০০০ কিঃমিঃতে ইঞ্জিন বেশ গরম হয়েছে কিন্তু এর পর এই সমস্যা আর ছিলো না। এখন পর্যন্ত বাইকটির ইঞ্জিনে শুধু অয়েল ফিল্টার বদলেছি।

লিফান কেপিআর রিভিউঃ সিটিং পজিশন ও আরামদায়ক রাইড

Lifan KPR 165R মোটরবাইকটির সিটিং পজিশন অ্যাগ্রেসিভ হলেও বাইকের সিট ও বডির ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে দীর্ঘ সময় ধরে রাইড করলেও শরীরে কোনো ব্যথা হয় না। বাইকে লং ট্যুর দেয়ার জন্য এই দামে লিফান কেপিআর ১৬৫আর-এর চেয়ে দারুণ বাইক আছে কি না সন্দেহ।

লিফান কেপিআর রিভিউঃ উন্নত হেডলাইট

প্রায় সব লিফান মোটরসাইকেলেই প্রোজেকশন হেড লাইট দেয়া হয়। আমার Lifan KPR 165R-এর হেডলাইট দিয়ে কুয়াশা ছাড়া অন্য যেকোনো সময়ে বেশ ভালোভাবে সামনের রাস্তা অনেকখানি দেখা যায়। হাইওয়েতে লিফান কেপিআর ১৬৫আর নিয়ে নাইট রাইডিং করে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছি।

Lifan KPR 165R বাইকটিতে যেসব সমস্যা পেয়েছি

দেশের জনপ্রিয় বাজেটধর্মী স্পোর্টস বাইক Lifan KPR 165R বাইকটিতে ভালো দিকের সংখ্যাই বেশি। তবুও আমার লিফান মোটরসাইকেলের কিছু জিনিস একটু হলেও হতাশ করেছে। নিচে আমার চোখে পড়া সমস্যা গুলো তুলে ধরছিঃ

লিফান কেপিআর রিভিউঃ গড়পড়তা মাইলেজ

লিফান কেপিআর ১৬৫আর বাইকটি চালিয়ে আমি ব্রেক ইন পিরিয়ড থেকেই চট্টগ্রাম সিটিতে ৩৪ কিঃমিঃ প্রতি লিটার এবং হাইওয়েতে ৩৮ কিঃমিঃ প্রতি লিটার করে মাইলেজ পেয়েছি। অনেকেই বলেন যে ১৬৫ সিসি ইঞ্জিন হিসেবে মাইলেজ এর চেয়ে ভালো হয়না। কিন্তু আমার ভাইয়ের বাইকও ১৬৫ সিসি এবং সেটার মাইলেজ ৪০-৫০ কিঃমিঃ প্রতি লিটার করে পাওয়া যায়। বলতে পারেন আমার Lifan KPR 165R বাইকটি এক বছর পর বদলানোর ইচ্ছার পেছনে মাইলেজ নিয়ে হতাশাই আমার একমাত্র কারণ।

লিফান কেপিআর রিভিউঃ মনোশক সাসপেনশনটি বেশ হার্ড

Lifan KPR 165R কার্বুরেটর বাইকটির পিছনে যে মনোশক সাসপেনশন দেয়া হয়েছে সেটা আমার কাছে বেশ হার্ড মনে হয়েছে। সিঙ্গেল রাইড করলে এটা খুব একটা অসুবিধা না করলেও পিলিয়ন নিয়ে রাইড করার সময় খুব একটা শান্তি পাই নি। পরে আমার লিফান মোটরসাইকেলে হোন্ডা হর্নেট বাইকের মনোশক লাগিয়ে নিয়েছি।

লিফান কেপিআর রিভিউঃ টার্নিং রেশিও বেশি

লিফান কেপিআর ১৬৫আর বাইকটির টার্নিং রেশিও বেশি। আর সেজন্য শহরের সাধারণ রাস্তা এবং ট্র্যাফিক জ্যামে বাইকটি চালানোর সময় টার্ন নিতে আমি বেশ প্যারা খেয়েছি।

লিফান কেপিআর রিভিউঃ ইঞ্জিন অয়েল রিফিলেও প্যারা

Lifan KPR 165R বাইকটির ইঞ্জিনে ১২০০ মিঃলিঃ ইঞ্জিন অয়েল লাগে। এই কারণে একবার রিফিলের সময় ২টা ১০০০ মিঃলিঃর বোতল কিনে একটা থেকে ২০০ মিঃলিঃ অয়েল নিয়ে রিফিল করতে হয়। এরপর থেকে যতবারই লিফান কেপিআর ১৬৫আর-এর ইঞ্জিন অয়েল রিফিল করতে যাবেন, ততবারই হয় বাসায় রাখা বোতল থেকে ২০০ মিঃলিঃ তেল মেপে গ্যারেজে নিতে হবে, নয়ত আবারও অতিরিক্ত একটি ১০০০ মিঃলিঃর বোতল কিনতে হবে। এই সমস্যাটা আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর লেগেছে।

লিফান কেপিআর রিভিউঃ সার্ভিসিং সেন্টারের অভাব

লিফান মোটরসাইকেলের আফটার সেলস সার্ভিস এবং পার্টস নিয়ে অনেকেরই আপত্তি রয়েছে। আমি চট্টগ্রামের হওয়ায় এইখানকার জেলা সদরে লিফানের একটি সার্ভিসিং সেন্টার পেয়েছি, যদিও এখানে সব পার্টস পাওয়া যায় না। তখন সেই পার্টস আবার ঢাকা থেকে আনিয়ে নিতে হয়। সারাদেশে ঢাকা আর এই চট্টগ্রাম ছাড়া আর কোথাও লিফান মোটরসাইকেলের আফটার সেলস সার্ভিস সেন্টার নেই। এটা বেশিরভাগ বাইকারের জন্যই একটা বড় সমস্যা।

উপসংহার

ভালো খারাপ সব মিলিয়ে আমার কাছে লিফান কেপিআর ১৬৫আর কার্ব বাইকটি ২ লাখ টাকার মধ্যে বেশ ভালো একটি বাইক মনে হয়েছে। চাইনিজ কোম্পানির হলেও এই বাইকটি বাজারের বেশিরভাগ স্পোর্টস বাইকের সাথে বেশ ভালো টক্কর দেয়ার যোগ্যতা রাখে। যারা মোটরবাইকে লং ট্যুর দিতে ভালোবাসেন, এবং যারা কম বাজেটে স্পোর্টি আউটলুক ও ভালো পারফরম্যান্সের বাইক নিতে চান তাদের জন্য Lifan KPR 165R কার্বুরেটর বেশ ভালো একটি অপশন। ধৈর্য নিয়ে আমার রিভিউটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। সবার জন্য রইলো শুভকামনা!

অনুরূপ খবর

  • New Launches & Reveals

    উত্তরা মোটরস উদ্বোধন করলো বাজাজ পালসার F250 ডুয়াল-চ্যানেল ABS বাংলাদেশে

    time
    2 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    সুজুকি বাংলাদেশ উন্মোচন করলো নতুন সুজুকি জিক্সার ২৫০ সিরিজ

    time
    2 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    আকর্ষণীয় মূল্যে লঞ্চ হলো বাজারে নতুন Bajaj Pulsar N250!

    time
    2 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    এর।আকর্ষণীয় সব ফিচারস নিয়ে বাজারে এলো Hero Ignitor Xtech

    time
    2 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    দেশের বাইক প্রেমীদের জন্যে সারপ্রাইজ নিয়ে আসছে পালসার ব্র্যান্ড

    time
    1 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    হোন্ডা বাংলাদেশে লঞ্চ করেছে নতুন Honda SP 125

    time
    1 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    জেনে নিন ২০২৪ সালে KYT হেলমেটের দাম

    time
    2 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    জুলাই থেকে বাজারে আসছে রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ মডেলের বাইক

    time
    1 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    পরিশেষে বাংলাদেশে লঞ্চ হলো নতুন Hero Karizma XMR 210

    time
    1 মিনিটে পড়া যাবে
  • New Launches & Reveals

    বাংলাদেশে লঞ্চ হতে যাচ্ছে Hero Thriller 160R 4V

    time
    2 মিনিটে পড়া যাবে

সর্বশেষ গাড়ির রিভিউ

  • Suzuki Alto K10 2015

    Hatchback

    ৳ 800K - 1.2M

  • Toyota Aqua 2014

    Hatchback

    ৳ 1.5M - 1.6M

  • Suzuki Swift 2017

    Hatchback

    ৳ 1.7M - 2.2M

  • Toyota Vitz 2017

    Hatchback

    ৳ 1.8M - 2.3M

  • Nissan Leaf 2014

    Hatchback

    ৳ 4M - 6M

  • Mitsubishi Montero 2015

    SUV & 4X4

    ৳ 6.5M - 8.6M

  • Suzuki Wagon R 2018

    Hatchback

    ৳ 750K - 1.1M

  • Honda Civic 2019

    Saloon & Sedan

    ৳ 3.5M - 4.5M

  • Land Rover Defender 2020

    SUV & 4X4

    ৳ 14M - 18M

  • Mitsubishi Lancer 2017

    Saloon & Sedan

    ৳ 2.5M - 3M

  • Toyota Axio 2016

    Saloon & Sedan

    ৳ 1.8M - 2.4M

  • Toyota Premio G Superior 2018

    Saloon & Sedan

    ৳ 2.3M - 3M

সর্বশেষ বাইকের রিভিউ

  • Hero Ignitor 125 2020 IBS

    ৳ 115.7K - 128.5K

  • Honda X-Blade 160 ABS

    ৳ 194.9K - 216.5K

  • Honda Livo 110 Drum

    ৳ 107.9K - 119.9K

  • Keeway TXM 150

    ৳ 161.1K - 179K

  • Suzuki Gixxer Monotone

    ৳ 182K - 192K

  • Suzuki Gixxer SF Matt Plus

    ৳ 315K - 350K

  • Yamaha R15 S

    ৳ 409.5K - 455K

  • Hero Hunk 150 R Dual Disc ABS

    ৳ 166.1K - 232K

  • TVS Apache RTR 165 RP

    ৳ 297K - 360K

  • Suzuki Intruder FI ABS

    ৳ 247.5K - 320K

  • Suzuki Bandit 150

    ৳ 288K - 320K

  • KTM RC 125

    ৳ 333K - 566K

hero

Bikroy এ মাত্র ২ মিনিটে আপনার গাড়ি বা মোটরবাইকের বিজ্ঞাপন দিন!