ছোট মোটরসাইকেল গ্রুপের সাথে বাইক চালানোর সুবিধাসমূহ

কাজের প্রয়োজন কিংবা শখ, বাংলাদেশের প্রায় সকল কাজের জরুরি এক বাহন হলো বাইক। গন্তব্যে পৌঁছানো সহজ করে তোলে দুই চাকার এই বাহন। একসময় জাপান থেকে আমদানী করে আনলেও বর্তমানে থাইল্যান্ড, ভারত, চীন ও ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ থেকেও মোটরসাইকেল আমদানী করা হয়। বাইকের ক্রমবর্ধমান চাহিদাই এর মূল কারণ। দেশের বড় একটি জনগোষ্ঠী বিশেষ করে তরুণ রাইডারদের প্রয়োজন এবং শখের জন্য বাইকের চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলছে। পাশাপাশি আছে দলগত বা গ্রুপিং করে বাইক চালানোর ক্রেজ। সড়কে প্রায়ই দেখা যায় একদল বাইকার একত্রে বাইক চালাচ্ছেন। কখনো বিশেষ প্রয়োজনে কিংবা কখনো নিতান্তই আনন্দ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। নিজেদের মধ্যে গড়ে তোলা এই অনলাইন এবং অফলাইন গ্রুপ হয়ে থাকে বিভিন্ন ধরণের। স্পোর্টস বাইক গ্রুপ, লং রাইড গ্রুপ কিংবা জেলা-উপজেলা ভিত্তিক গ্রুপ। বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে এই গ্রুপ রাইডিং কালচার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলুন আজকে জেনে নেই, এই গ্রুপ রাইডিং সুবিধাসমূহ।
গ্রুপ রাইডিং সুবিধা-
- গ্রুপ রাইডিং এর সুবিধার কথা বলতে গেলে শুরুতেই আসে নিরাপত্তার ব্যাপারটি। এই ধরণের গ্রুপগুলোতে সাধারণত একজন টিম লিডার থাকেন, যিনি সামনে থেকে মোটরসাইকেল গ্রুপ কে নেতৃত্ব দেন। টিম লিডার রাইডের সমস্ত পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করে থাকেন যেমন রাইডের শেষ কোথায় হবে, কোন পথে যাবেন এবং পথের বিস্তারিত তথ্য বাকিদের সরবরাহ করা ইত্যাদি। এছাড়া পেছনে আরেকজন নির্দেশক থাকেন যিনি পেছন থেকে গ্রুপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তাই কখনো কোনো মেম্বার দুর্ঘটনায় বা রাস্তায় ডাকাতদল বা ছিনতাইকারীদের হাতে পড়লে তারা একসাথে মোকাবেলা করতে পারেন। পাশাপাশি গ্রুপ যত ছোট হবে তত লিডারদের জন্য সকলের সঠিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হয়। তাই লং রাইডের ক্ষেত্রে ছোট গ্রুপ বেছে নেওয়া উপযুক্ত।
- ছোট গ্রুপে রাইডিং করার আরেকটা সুবিধা হলো যেকোনো আঁকাবাকা রোড, জনাকীর্ণ জায়গায় কিংবা শীর্ণ ট্রেইল দিয়ে সহজেই প্লান করে আগানো যায়। বড়গ্রুপগুলোর ক্ষেত্রে এটি একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার।
- শহরে সমস্যা না হলেও গ্রামে বা কম বসতিপূর্ণ জায়গায় বড় বাইক গ্রুপের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা বেশ কষ্টসাধ্য। তাই এক্ষেত্রে ছোট মোটরসাইকেল রাইডিং টিমের জন্য খাবার, বাসস্থান এবং অবকাশ যাপনের ব্যবস্থা করা অনেকটা সহজ।
- ক্রস-কান্ট্রি রাইড বা ট্রান্সকন্টিনেন্টাল রাইডের মতো দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য বাইক রাইডিং গ্রুপ যত ছোট রাখা যায় ততই ভালো। কেননা ছোট পরিসরে দলকে নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ করা বেশ সহজ। এছাড়া গ্রুপ ছোট হলে রাইডিং এর সময় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় শিফট করা যায় অতি স্বল্প সময়ে।
- গ্রুপ রাইডিং এ অনেক রাইডার একসাথে রাইড করলে সেক্ষেত্রে ওভারটেকিং প্রবণতা বেশি থাকে। ছোট গ্রুপ হলে একে অপরের সাথে জানাশোনা এবং বোঝাপড়া ভালো হয়। এই কারণে দেখা যায় ওভারটেকিং মানসিকতা কম থাকে এবং সারিবদ্ধভাবে বাইক চালিত হয়। এতে রাস্তায় অন্য গাড়ীর চলাচল যেমন সহজ হয় তেমনি রাইদারদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়।
- গ্রুপ যত ছোট হবে তত রাইডাররা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনার সুযোগ পেয়ে থাকে। ফলে গ্রুপ রাইডিং এর নিয়ম, নতুন রুট এবং আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ে নানা কিছু জানতে এবং শিখতে পারা যায়। অর্থাৎ নতুন রুট এক্সপেরিমেন্ট করার ক্ষেত্রেও পাওয়া যায় বাড়তি সুযোগ।
- ছোটগ্রুপগুলোতে একজন অভিজ্ঞ রাইডার থাকলে তার নির্দেশনা মোতাবেক বাকিরা সহজে রুট অনুসরণ করতে পারেন। গ্রুপের কোন একজনের সমস্যা হলে বাকিরা সহজেই যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন এবং সেই অনুসারে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে আমরা বেশ কিছু বাইক গ্রুপ দেখতে পাই যেমন দুই চাক্কা, মোটরসাইকেল ভ্যালী, বিডি বাইকার ক্লাব, বাইক বিডি ইত্যাদি। এসব গ্রুপগুলোতে পারস্পারিক ভ্রাত্রিত্বের মাধ্যমে বাইকাররা নিজেদের বাইক সংক্রান্ত সমস্যা শেয়ার করেন এবং সমাধানও পেয়ে থাকেন। এছাড়া জেলা বা এলাকার নানান অফলাইন গ্রুপতো আছেই, যারা সারাবছর আনন্দভ্রমণের জন্য গ্রুপ রাইডিং আয়োজন করে থাকে। বাইকারদের নিয়মিতি কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকতে চাইলে এই গ্রুপগুলোতে অনুসরণ করতে পারেন যে কেউ।
যেকোনো বাইক বা স্কুটার রিভিউ, স্পেসিফিকেশন, ফিচারস এবং মোটরবাইকের প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্য পেতে ভিজিট করুন বাইকস গাইড। বাংলাদেশে বিভিন্ন নতুন এবং ব্যবহৃত বাইক সম্পর্কিত তথ্য জানতে হলে চোখ রাখুন দেশের সেরা মোটরবাইক মার্কেটপ্লেস Bikroy-এ।



































