সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্কুটার বাইকের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। যানজট এড়িয়ে স্বল্প দুরুত্বে দ্রুত যোগাযোগের প্রয়োজনে স্কুটার খুবই কার্যকর। হালকা ওজন এবং অটোম্যাটিক গিয়ার হওয়ায় স্কুটার অপারেট করা খুবই সহজ। এছাড়াও স্কুটার নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য মানানসই। তবে স্কুটারের ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটি কম হওয়ায় দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য এটি পারফেক্ট নয়। স্বল্প দূরত্বে ঘন-ঘন ব্যবহারের জন্য স্কুটার আদর্শ একটি বাহন। স্কুটারের মাইলেজ বেশ হলেও স্পিড তুলনামূলক কম হয়। এই সব বাইক ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য মূলত সেফ এবং কম্ফোর্টেবল রাইডিং।বাংলাদেশে ইয়ামাহা, হোন্ডা, সুজুকি, হিরো, টিভিএস সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্কুটার পাওয়া যায়। রানার একটি বাংলাদেশী মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী কোম্পানি। দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে, রানার সাশ্রয়ী মূল্যের বাইক এবং স্কুটার বাজারে এনেছে। রানার ব্র্যান্ডের স্কুটারগুলো লাইটওয়েট, টেকসই, এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব। এই ব্লগে বাংলাদেশের সেরা ৫টি রানার স্কুটার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সেরা ৫টি রানার স্কুটার –
এটি একটি ১১০ সিসির মোপেড ডিজাইনের ইউনিসেক্স স্কুটার। এটিতে সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪-স্ট্রোক, ২-ভালভ, এবং এয়ার কুলড ফিচার বিশিষ্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। স্কুটারটি থেকে আপনি প্রায় ৪৫ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ৯০ কিমি/আওয়ার এভারেজ টপ স্পিড পেতে পারেন। ট্রান্সমিশন অটোম্যাটিক হওয়ায় গিয়ার শিফটিং-এর ঝামেলা নেই। এটি ইলেকট্রিক এবং কিক দুই ভাবেই স্টার্ট দেয়া যাবে।স্কুটারটির ওজন মাত্র ১০০ কেজি, এবং জ্বালানি ট্যাংক ক্যাপাসিটি ৫ লিটার। এটিতে অ্যালয় হুইল এবং টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। এটির সামনের দিকে টেলিস্কোপিক ফোর্কস এবং পেছনের দিকে স্প্রিং লোডেড টুইন শক অ্যাবজর্বার সাসপেনশন ব্যবহার হয়েছে। এটির ব্রেking সিস্টেমে বেসিক ডিস্ক–ড্রাম সেটআপ দেয়া হয়েছে। স্কুটারটির সিটের নিচে সেফটি সুইচ রয়েছে, যেকোনো জরুরি অবস্থায় এই সুইচটি স্কুটার বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
মূল্য – এটির বর্তমান বাজার দর ১৩৯,০০০ টাকা মাত্র।
সুবিধা (১) অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন (২) বিশাল স্টোরেজ স্পেস (৩) প্রি-ইন্সটলড সিকিউরিটি সিস্টেম
অসুবিধা (১) প্লাস্টিক বডি (২) পিছনের টায়ার (৩) ফুয়েল ক্যাপাসিটি কম
এটি একটি মোপড টাইপ স্কুটার। এটিতে ৯৮.১৬ সিসি ডিসপ্লেসমেন্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা সিঙ্গেল-সিলিন্ডার, ন্যাচারাল এয়ার-কুলড, এবং ফোর-স্ট্রোক ধরণের। স্কুটারটি থেকে আপনি প্রায় ৪০ কিমি/লিটার মাইলেজ এবং প্রায় ৮০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন।স্কুটারটির ফুয়েল সাপ্লাই মেথড পিজেড১৯ কার্বুরেটর। ইঞ্জিনটির ইগনিশন টাইপ ডিজিটাল মাইক্রোকন্ট্রোলার সিডিআই, থ্রটল কন্ট্রোল সুইচ সহ। এটির কনসোল প্যানেলটি সম্পূর্ন এনালগ টাইপ হলেও আপডেটেড। হেডলাইট, টেইল লাইট সহ সকল ইনডিকেটর হ্যালোজেন টাইপ। এটির জ্বালানি ধারণ ক্ষমতা ৪ লিটার, এবং টোটাল ওজন ৯০.৬ কেজি।স্কুটারটির সামনের দিকে হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক এবং পিছনের দিকে কয়েল স্প্রিং হাইড্রোলিক সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। এটির উভয় চাকায় ড্রাম টাইপ ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। এটিতে অ্যালয় হুইল এবং টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে।
মূল্য - বর্তমানে স্কুটারটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। (আনঅফিশিয়াল প্রাইস ৮০,০০০ টাকা)
সুবিধা (১) ডিজিটাল মাইক্রোকন্ট্রোলার সিডিআই (CDI) ইগনিশন টেকনোলজি (২) জ্বালানি সাশ্রয়ী (৩) ঘন-ঘন ব্যবহার উপযোগী
অসুবিধা (১) ফুয়েল ক্যাপাসিটি কম (২) ড্রাম ব্রেক (৩) সরু টায়ার
এটি একটি ১১০ সিসির ডিসেন্ট ডিজাইনের স্কুটার। এটিতে এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এবং সিঙ্গেল ওভারহেড ক্যামস্যাফট ফিচার বিশিষ্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এটি থেকে আপনি প্রায় ৪৫ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ৮০ কিমি/আওয়ার স্পিড পেতে পারেন। এটি কিক এবং ইলেকট্রিক উভয় মেথডে স্টার্ট করা যায়।স্কুটারটির ওজন মাত্র ১০০ কেজি এবং ফুয়েল ক্যাপাসিটি ৪.৮ লিটার। এতে রয়েছে ওয়েট মাল্টিপ্লেট ক্লাচ, সাথে আছে ৪ স্পিডের ম্যানুয়াল গিয়ারবক্স। এটির সামনের চাকায় সিঙ্গেল ডিস্ক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক রয়েছে। এটির সামনে দিকে হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক এবং পিছনের দিকে কয়েল স্প্রিং হাইড্রোলিক সাসপেনশন রয়েছে। এটিতে অ্যালয় হুইল এবং টিউব টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত ব্যবসায়িক এবং ডেলিভারি ম্যানদের যাতায়াতের যাতায়াতের সুবিধার জন্য স্কুটারটি বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে।
মূল্য – এটির বর্তমান বাজার দর ১০৯,০০০ টাকা মাত্র।
সুবিধা (১) ফুয়েল ইফিসিয়েন্ট (২) ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক (৩) ঘন-ঘন ব্যবহার উপযোগী
অসুবিধা (১) রিয়ার ব্রেক দূর্বল (২) রিভার্স গিয়ার নেই (৩) ছোট হুইলবেস
(৪) Runner eWave Eco
এটি একটি ক্লাসি লুকিং ইলেকট্রিক স্কুটার। এটিতে প্রপালশনের জন্য একটি পাওয়ারফুল বৈদ্যুতিক মোটর ব্যবহার করা হয়েছে। এই ই-স্কুটারে সিটি রাইডিং, এবং স্বল্প দুরত্বে কম্ফোর্টেবল ভাবে যাতায়াত করতে পারবেন। ফুল চার্জে প্রায় ৫০ কিমি পথ অতিক্রম করা যায়। এটিতে লেড-অ্যাসিড ধরণের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। এটির ব্যাটারি পাওয়ার প্রায় ৭২ ভোল্ট এবং ২০ অ্যাম্পিয়ার।স্কুটারটি হাল্কা হওয়ায় পিলিয়ন কিংবা ভারী ওজন নিতে পারবেন না। এটির সামনের চাকায় ডিস্ক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। এটির সামনের দিকে টেলিস্কোপিক এবং পিছনের দিকে ডুয়েল শক সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। এটির ট্রান্সমিশন অটোম্যাটিক। এটি থেকে আপনি ৩০-৩৫ কিমি/আওয়ার এভারেজ টপ স্পিড পেতে পারেন।
মূল্য - বর্তমানে স্কুটারটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। (আনঅফিশিয়াল প্রাইস ১০৮,০০০ টাকা)
সুবিধা (১) অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন (২) সামনের ডিস্ক ব্রেক (৩) ভালো মাইলেজ
অসুবিধা (১) সাধারণ বিল্ড কোয়ালিটি (২) সরু টায়ার (৩) নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্যাটারি পরিবর্তন করতে হয়
(৫) Runner eWave Electrica
এটি একটি স্মার্ট লুকিং ইলেকট্রিক স্কুটার। এটিতে ৬০ ভোল্ট, ২০ অ্যাম্পিয়ার, এবং ৮০০ ওয়াটের পাওয়ারফুল লেড-অ্যাসিড ধরণের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। এই ই-স্কুটারটি থেকে আপনি ফুল চার্জে প্রায় ৪০-৫০ কিমি পথ অতিক্রম করতে পারবেন। এটি থেকে ৪৫-৫০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন। এটি সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব।সিটি রোডে স্বল্প দুরত্বে কম্ফোর্টেবল ভাবে যাতায়াত করার জন্য এটি অসাধারণ একটি বাহন। স্কুটারটি হাল্কা হওয়ায় পিলিয়ন কিংবা ভারী ওজন নিতে পারবেন না। এটির সামনের চাকায় ডিস্ক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। এটির সামনের দিকে টেলিস্কোপিক এবং পিছনের দিকে ডুয়েল শক সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। এটির ট্রান্সমিশন অটোম্যাটিক।
মূল্য - বর্তমানে স্কুটারটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। (আনঅফিশিয়াল প্রাইস ১২৫,০০০ টাকা)
সুবিধা (১) ভালো মাইলেজ (২) অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন (৩) সামনের ডিস্ক ব্রেক
অসুবিধা (১) সরু টায়ার (২) নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্যাটারি পরিবর্তন করতে হয় (৩) স্পিড কম