বাংলাদেশের সেরা ৫ টি হোন্ডা স্কুটার

মোটরসাইকেল এবং অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে হোন্ডা একটি পরিচিত নাম। হোন্ডা ব্র্যান্ডের স্কুটার বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। স্কুটার হালকা হওয়ায় সহজেই হ্যান্ডেল করা যায়, আবার দেখতে বেশ স্টাইলিশ হওয়ায় মানিয়ে যায় যেকোনো পরিস্থিতিতে। যানজটপূর্ণ রাস্তায় দ্রুত এবং সহজে যাতায়াতের জন্য স্কুটার বেশ কার্যকর। শহরের ট্রাফিক পরিস্থিতির কারণে, ঘন ঘন বাইকের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, তাই স্কুটারের অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন একটি প্লাস পয়েন্ট। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য এটি মানানসই। যানজট এবং অপর্যাপ্ত গণ-পরিবহনের কারণে সব শ্রেণী-পেশার মানুষদের কাছে স্কুটারের আগ্রহ বাড়ছে।তবে ফুয়েল ক্যাপাসিটি কম হওয়ায় লং ট্যুরের জন্য স্কুটার ভালো অপশন নয়। এছাড়াও বেশিরভাগ স্কুটার হাইওয়ে রোডে যাতায়াতের উপযোগী নয়। বাংলাদেশের বাজারে বেশ কিছু নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের স্কুটার পাওয়া যায়। এই ব্লগে বাংলাদেশের সেরা ৫ টি হোন্ডা স্কুটার সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সেরা ৫ টি হোন্ডা স্কুটার –
(১) Honda Activa 125 Fi BS6
এটি ১২৫ সেগমেন্টের একটি স্মার্ট লুকিং স্কুটার। স্কুটারটির প্রধান আকর্ষণ হলো এটির সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম এবং বিএস৬ ইমিশন স্ট্যান্ডার্ড। এটির ইঞ্জিন ফ্যান-কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার এবং ফুয়েল ইনজেকশন ফিচার বিশিষ্ট। এটি থেকে আপনি প্রায় ৫০ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ১০০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন। এটি কিক এবং ইলেক্ট্রিক উভয় মেথডে স্টার্ট করা যায়।স্কুটারটির সামনের চাকায় ডিস্ক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক ইনস্টল করা হয়েছে। সামনের চাকায় টেলিস্কোপিক এবং পেছনের চাকায় ৩-স্টেপ অ্যাডজাস্টেবল স্প্রিং লোডেড হাইড্রোলিক সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। স্কুটারটির টোটাল বডি ওয়েট ১১১ কেজি এবং ফুয়েল ক্যাপাসিটি ৫.৩ লিটার। এটিতে অ্যালয় হুইল সহ টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে।স্কুটারটির বর্তমান বাজারমূল্য – ২২৫,০০০ টাকা মাত্র।
সুবিধা
- স্টোরেজ স্পেস
- দুর্দান্ত সাসপেনশন
- সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম
অসুবিধা
- হুইলবেইজ কম
- ফুয়েল ক্যাপাসিটি
(২) Honda Dio
এটি ১১০ সিসির একটি ডিসেন্ট লুকিং স্কুটার। স্কুটারটির প্রধান আকর্ষণ এটির কম্বাইন্ড ব্রেকিং সিস্টেম (CBS) এবং বিএস-৬ ইমিশন স্ট্যান্ডার্ড। ইঞ্জিনটি ফোর-স্ট্রোক, ফ্যান কুল্ড, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এবং স্পার্ক ইগনিশন ফিচার বিশিষ্ট। এটি থেকে আপনি প্রায় ৪৫ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ৯০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন। এটি কিক এবং ইলেকট্রিক উভয় মেথডে স্টার্ট করা যায়।স্কুটারটির নতুন সংযোজনে হোন্ডার এসিজি স্টার্টার প্রযুক্তি, হোন্ডা ইকো টেকনোলজি, এবং সম্পূর্ণ ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল সংযুক্ত করা হয়েছে। এটির সামনে টেলিস্কোপিক ফর্ক, এবং পিছনে হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। এটিতে সিটিং পজিশনে সিট খোলার সুইচ, ১৮-লিটার স্টোরেজ ক্যাপাসিটি এবং মোবাইল চার্জিং সকেট রয়েছে। এটির ফুয়েল ক্যাপাসিটি ৫.৩ লিটার এবং টোটাল ওজন ১০৩ কেজি।স্কুটারটির বর্তমান বাজার মূল্য - ১৯৫,০০০ টাকা মাত্র।
সুবিধা
- কন্টিনিউয়াসলি ভ্যারিয়েবল ট্রান্সমিশন (CVT) সিস্টেম
- স্ট্যান্ডার্ড সাসপেনশন
- কম্বাইন্ড ব্রেকিং সিস্টেম (CBS)
অসুবিধা
- ড্রাম ব্রেক
- মাইলেজ আরেকটু বেশি হতে পারতো
(৩) Honda Vario 125 ESP
এটি রেগুলার কমিউটের উপযোগী, অসাধারণ মানের একটি স্কুটার। এটিতে ১২৫ সিসির ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। ইঞ্জিনটি ৪-স্ট্রোক, লিকুইড কুল্ড, এবং সিঙ্গেল সিলিন্ডার ফিচার বিশিষ্ট। স্কুটারটির সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হলো এর মাইলেজ। এটি থেকে আপনি প্রায় ৬০ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ১০৫ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন। এটি শুধুমাত্র ইলেকট্রিক মেথডে স্টার্ট করা যায়।স্কুটারটিতে রয়েছে এনহেন্সড স্মার্ট পাওয়ার (ইএসপি) ফিচার, যা এটির পারফরম্যান্স বাড়ানোর পাশাপাশি ইকো-ফ্রেন্ডলি করে তোলে। এটির সামনের দিকে টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পিছনের দিকে সুইং আর্ম সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। এটির ব্রেকিং সিস্টেম সিঙ্গেল ডিস্ক। এটিতে টিউবলেস টায়ার এবং অ্যালয় হুইল ব্যবহার করা হয়েছে। এটির ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল সম্পূর্ণ ডিজিটাল।স্কুটারটির বর্তমান বাজারদর - ১২১,৮০০ টাকা মাত্র।
সুবিধা
- দুর্দান্ত মাইলেজ
- রেগুলার কমিউটের উপযোগী
- কম্ফোর্টেবল সিটিং পজিশন
অসুবিধা
- লো গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স
- লো ফুয়েল ক্যাপাসিটি
(৪) Honda PCX 150
এটির একটি গর্জিয়াস ডিজাইনের ম্যাক্সি স্কুটার। এটিতে ১৫০ সিসির ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। ইঞ্জিনটি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪-স্ট্রোক, লিকুইড কুল্ড এবং ফুয়েল ইনজেকশন ফিচার বিশিষ্ট। স্কুটারটির প্রধান আকর্ষণ এটির অ্যান্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম, অ্যান্টি-থিপ্ট সিস্টেম, এবং ইঞ্জিন কিল সুইচ। স্কুটারটি থেকে আপনি প্রায় ৩৫ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ৭০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন। এটি সিটি-হাইওয়ে উভয় রোডে চলাচলের উপযোগী।এটি ইনস্ট্রুমেন্ট প্যানেল সম্পূর্ণ ডিজিটাল। এটির ব্রেকিং সিস্টেম এবিএস সহ সিঙ্গেল ডিস্ক। এটির সামনের চাকায় টেলিস্কোপিক ফর্ক্স এবং পেছনের চাকায় মোনোশক সাসপেনশন ইনস্টল করা হয়েছে। এটির ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটি ৮ লিটার এবং টোটাল ওজন ১৩০ কেজি। এটির উভয় চাকায় অ্যালয় হুইল সহ টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে।স্কুটারটির বর্তমান মূল্য – ৫১০,০০০ টাকা মাত্র।
সুবিধা
- পাওয়ারফুল ইঞ্জিন
- অ্যান্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম
- অ্যান্টি-থিপ্ট সিস্টেম
অসুবিধা
- স্টোরেজ এর স্পেস কম
- গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম
(৫) Honda Super Cub C125 ABS
এটির একটি ক্লাসিক ডিজাইনের ফ্যাশনেবল লুকিং কাব-স্কুটার। এটিতে ওল্ড ফ্যাশন্ড স্টাইলের সাথে আধুনিক টেকনিক্যাল ফিচার সংমিশ্রণ করা হয়েছে। এটিতে ১২৫ সিসির ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। ইঞ্জিনটি এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক, এবং সিঙ্গেল-সিলিন্ডার ফিচার বিশিষ্ট। পিজিএম ফুয়েল ইঞ্জেকশন টেকনোলজি ব্যবহার করায় এটি জ্বালানি সাশ্রয়ে সহায়ক। স্কুটারটি থেকে আপনি প্রায় ৪৫ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ৯০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন।স্কুটারটির প্রধান আকর্ষণ হলো এটির এবিএস, স্মুথ সাসপেনশন, এবং ফ্যাশনেবল স্টাইল। এটিতে অটো কী-ইগনিশন, সেন্ট্রিফিউগাল ক্লাচ, এবং সেমি-অটোমেটিক ট্রান্সমিশন রয়েছে। এছাড়াও আপনি এটিতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন সিস্টেমও ব্যবহার করতে পারবেন। এটিতে এলইডি লাইটিং সেটআপ এবং ডিজিটাল কনসোল প্যানেল দেয়া হয়েছে। এটির জ্বালানি ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৩.৮ লিটার এবং টোটাল ওজন ১০৯ কেজি।স্কুটারটির বর্তমান মূল্য – ৪৫০,০০০ টাকা মাত্র।
সুবিধা
- ক্লাসিক ফ্যাশনেবল ডিজাইন
- পিজিএম ফুয়েল ইঞ্জেকশন টেকনোলজি
- এন্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম
অসুবিধা
- পিছনের চাকার ড্রাম ব্রেক
- ফুয়েল ক্যাপাসিটি কম

































