বাইকের টায়ার প্রেশার চেক করার সঠিক উপায় কী কী?

Humyra Sharmind Alam
time
6 মিনিটে পড়া যাবে
feature image
বাইকের অন্যান্য পার্টস এর মধ্যে টায়ার এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাহিরের কড়া রোদ, বৃষ্টি, ঝড় এসব কিছু সবচেয়ে বেশি সহ্য করে বাইকের টায়ার। অথচ টায়ারের যত্ন করতে বেশ অবহেলা দেখায় বেশিরভাগ চালকেরা।বাইকের টায়ার সঠিক প্রেশারে না থাকলে মাইলেজ কমে যায় এবং পারফরম্যান্সের ব্যাঘাত ঘটে। বাইকের সাসপেনশন থেকে শুরু করে বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম ও স্পিড সব কিছুই ভালো নিয়ন্ত্রণে থাকে যদি টায়ার সচল থাকে। বাইকের গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ের সাথে টায়ার জড়িত রয়েছে। তাই টায়ারের যত্ন নেওয়া মানে নিজের নিরাপদ রাইডিং নিশ্চিত করা।ম্যানুফ্যাকচার দ্বারা নির্ধারিত টায়ার প্রেশার বজায় রাখলে বাইকের কন্ট্রোলিং পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। আরামদায়ক রাইডিং নিশ্চিত করতে অবশ্যই প্রয়োজন টায়ারের সঠিক পরিচর্যা। বাইকের টায়ার রাবার দিয়ে তৈরি করা হয় এবং এর ভিতরের অংশে বাতাসে পরিপূর্ণ থাকে। টায়ার প্রেশার অতিরিক্ত কম বা বেশি থাকলে এর কার্যক্ষমতা কমে যায়। টায়ার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকলে বাইকের ভালো গ্রিপ পাওয়া যায়। এবং বাইকের ভালো পারফরম্যান্স পেতে প্রেশার স্বাভাবিক থাকা বেশ জরুরি।টায়ারের প্রেশার মাপার ক্ষেত্রে ভরসা করতে হবে ভালো মানের প্রেশার গজের উপর। প্রেশার মাপার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন টায়ার আগে থেকেই অতিরিক্ত গরম না থাকে। এমনটা হলে, আপনার প্রেশার মাপতে ভুল হবে। টায়ার বেশি গরম থাকলে তা আগে স্বাভাবিক করে নিতে হবে তারপর প্রেশার মাপতে হবে। বাইকের টায়ার প্রেশার চেক করার উপায় কি এবং এর গুরুত্বের সম্পর্কে আজকের আলোচনায় আমরা বিস্তারিত জানবো।

টায়ার প্রেশার নিয়ে কিছু সাধারণ তথ্য

সাধারণত দেখা যায়, টায়ার প্রস্তুতকারকেরা টায়ার ঠান্ডা বা স্বাভাবিক রাখার জন্য নির্দিষ্ট প্রেশার সেট করে দেয়। চাকার কত পিএস আই প্রেশার রাখতে হবে তা আপনার বাইকের পিছনের চাকার মধ্যেই উল্লেখ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভালো হয় যদি চাকার পিএস আই প্রেশার সামনে ২৯ এবং পিছনে ৩৩ রাখা হয়। যারা একটু বেশি ওজন নিয়ে বাইকে চলা ফেরা করেন তাদের ক্ষেত্রে টায়ার প্রেশার সামনে ৩৫ এবং পিছনে ৪০ পিএস আই রাখা উচিত।অন্যদিকে, আপনার বাইক চালানোর ধরনের উপর ভিত্তি করে টায়ার বেছে নেওয়া প্রয়োজন। এবং, তা অবশ্যই আপনার বাইক মডেলের সাথে মানানসই হতে হবে। ভেজা রাস্তায় চালানোর সময় টায়ার প্রেশার কম রাখা উত্তম। এতে করে বাইক চালানোর সময় ভালো গ্রিপ পাওয়া যায়।

বাইকের টায়ার প্রেশার কখন চেক করা প্রয়োজন

কিছু সঠিক নিয়মে টায়ার প্রেশার চেক করার উপায় রয়েছে। বাইকের টায়ার প্রেশার চেক করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো যখন বাইকের টায়ার ঠাণ্ডা অবস্থায় থাকবে। রাতে বা সকালে যেকোনো সময়ে আপনি টায়ার প্রেশার মেপে দেখতে পারেন। তবে এর জন্য আপনার বাইকের টায়ার ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপ মাত্রায় থাকা বেশি প্রয়োজন।ইঞ্জিন বেশি গরম হয়ে গেলে কিংবা বাহিরের গরম তাপ আপনার বাইকের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যার প্রভাব আপনার বাইকের টায়ারের উপরও পড়তে পারে। এমতাবস্থায়, টায়ার বেশি গরম থাকলে সেগুলোর সঠিক পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না এবং বাইকের প্রেশার মাপার ক্ষেত্রে ভুল হয়। বিশেষ করে দুপুর বেলায় রোদের তাপ বেশি থাকার কারণে বাইকের টায়ার স্বাভাবিক থেকে একটু বেশিই গরম থাকে। তাই এমন অবস্থায় টায়ার প্রেশার সঠিক পরিমাপ করা যায় না।সুতরাং, টায়ার বেশি গরম থাকলে প্রেশার মাপা উচিত নয়। তাই অবশ্যই, আপনার টায়ার প্রেশার মাপার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন টায়ার ঠান্ডা আছে কি না।

টায়ার প্রেশারের প্রেশার পরিমাপের যন্ত্র

অবশ্যই, একটি ভালো ব্র্যান্ডের টায়ার প্রেশার গজ বা প্রেশার পরিমাপের যন্ত্র দিয়ে আপনার বাইকের টায়ার প্রেশার পরিমাপ করা উচিত। প্রায়ই সময় দেখা যায়, অনেক চালকেরা অনভিজ্ঞ দোকানদার দ্বারা বাইকের টায়ার প্রেশার মেপে নেয়।অনভিজ্ঞ মেকানিকের দ্বারা টায়ার প্রেশার চেক করানো এবং আসল প্রস্তুতকারকের মাধ্যমে চেক করানোর মধ্যে বিশাল তফাৎ রয়েছে। অতএব, নিয়মিত টায়ার প্রেশার চেক করতে একটি ভালো মানের প্রেশার গজ কিনে নেওয়া উত্তম। বিশেষ করে বাইকের জন্য নির্মিত একটি অরিজিনাল টায়ার প্রেশার গজ কিনে নেওয়া উচিত।

বাইকের টায়ার প্রেশার বেশি বেড়ে গেলে কি করবেন

বাইকের টায়ার প্রেশার নরমাল থেকে যদি বেশি বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে টায়ার থেকে প্রয়োজন মতো অতিরিক্ত বাতাস বের করে ফেলা উত্তম। একটু একটু করে টায়ার থেকে বাতাস ছেড়ে দিলে টায়ারের মধ্য থেকে অতিরিক্ত চাপ কমে আসে। এখানে খেয়াল রাখতে হবে যেন টায়ার প্রেশার আগের মতো নরমাল হয়ে যায়। এতে আপনার বাইকের টায়ার ক্ষতি হওয়া থেকে নিরাপদ থাকবে। পরবর্তীতে, ভালো ব্র্যান্ডের একটি প্রেশার গজ দিয়ে পরীক্ষা করে নিন আপনার টায়ার প্রেশার স্বাভাবিক আছে কি না।টায়ার প্রেশার বেশি থাকলে বাইক চলার সময় একটু বেশি ঝাঁকুনি অনুভব হবে। এমতাবস্থায়, বাইক রাইডিং এর সময় হঠাৎ ব্রেক করলে বাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যেতে পারে। টায়ারে হাই প্রেশার থাকলে গ্রিপ পেতে অসুবিধা হয়।অন্যদিকে, অধিক প্রেশারের ফলে বাইক পাংচার হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে এবং ব্রেকিং সিস্টেমে সমস্যার সৃষ্টি হয়। সুতরাং, টায়ার প্রস্তুতকারকের নির্ধারিত ম্যানুয়াল অনুযায়ী বাইকের টায়ার প্রেশার সেট করে নিতে হবে। টায়ারের প্রেশার স্বাভাবিক থাকলে নিরাপদে দীর্ঘ পথ চলা সম্ভব হয়।

টায়ার প্রেশার বেশি কমে গেলে করণীয় কি

আপনার বাইকের টায়ার প্রেশার যদি বেশি কমে যায় সেক্ষেত্রে বাইসাইকেল পাম্প ব্যবহার করে নরমাল প্রেশারে নিয়ে আসতে পারেন। এই পদ্ধতিও বেশ কার্যকর। প্রতিবার বাইকে ফুয়েল নেবার পর টায়ার প্রেশার চেক করা উচিত। যদি দীর্ঘদিন বাইক না ব্যবহার করে থাকেন সেক্ষেত্রে প্রতি দুই সপ্তাহ পর পর চেক করানো উত্তম। এই নিয়মগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার বাইকের টায়ারের সঠিক খেয়াল রাখতে পারবেন।টায়ার প্রেশার কম থাকলে কি কি লক্ষণ দেখা যায়----১) টায়ারের দুইপাশ ক্ষয় হয়ে যায় ২) বাইকের গতি আগের তুলনায় কমে যায় ৩) ফুয়েল খরচ বেড়ে যায় ৪) বাইক সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়না৫) টায়ার ডেবে যায় ৬) টায়ারের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ৭) টায়ারের আকৃতি ও সাইজের ক্ষতি হয়

বাইকের টায়ারের গুরুত্ব

ভালো মানের টায়ারের গুরুত্ব কত বেশি তা একজন বাইকার ভালো বুঝে। আপনার বাইক নিয়ন্ত্রণ করা কতটা সহজ হবে তা নির্ভর করে বাইকের টায়ারের উপর। বিশেষ করে টায়ার প্রেশার স্বাভাবিক আছে কি না তার উপর নির্ভর করবে। বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম কেমন কাজ করবে সেটাও নির্ভর করে বাইকের টায়ারের অবস্থার উপর।টায়ারের মধ্যে সঠিক পরিমাণ বাতাস না থাকলে এর কার্যকারিতা কমে যায়। বাইকের টায়ার ভালো রাখতে অবশ্যই ম্যানুফ্যাকচার দ্বারা নির্ধারিত প্রেশার সেট করে নিতে হবে। টায়ার যেন সঠিক তাপমাত্রায় থাকে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রেশার বজায় রাখা। এতে করে আপনার বাইকের পারফরম্যান্স ঠিক থাকবে।দেশের বাজারে মোটরসাইকেলের দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন বাইকস গাইড সাইটে।

পরিশেষে

টায়ারের গুরুত্ব কত বেশি এবং এর যত্ন করা কতটা প্রয়োজন তা নিশ্চয়ই আপনারা বুঝে গেছেন। কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে আগে চেক করে নিন আপনার টায়ার প্রেশার ঠিক আছে কি না। লং ট্রিপে যাওয়ার আগে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে টায়ার প্রেশার সঠিক পরিমাণে আছে কি না। বাইকে চলার পথে টায়ারের প্রেশার কম বা বেশি হতে পারে।টায়ার প্রেশার বেশি থাকলে বাইক গ্রিপ করতে অসুবিধা হয় এবং বেশি মাত্রায় ঝাঁকুনি অনুভব হবে। বাইক পাংচার হয়ে যাওয়ার সম্ভবনাও থাকে যদি প্রেশার অতিরিক্ত কমে যায়। সেক্ষেত্রে একটি প্রেশার গজ অথবা প্রেশার পরিমাপের যন্ত্র সাথে থাকা অত্যন্ত জরুরি। যদি টায়ারের প্রেশার স্বাভাবিক রাখেন তবে নিরাপদে দীর্ঘ পথ চলা সম্ভব হবে। এতে করে আপনি সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে পারবেন।টায়ার প্রস্তুতকারকের ম্যানুয়াল অনুযায়ী নির্ধারিত প্রেশার বজায় আছে কি না তা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। না থাকলে দ্রুত ঠিক করে নিতে হবে। ব্রেকিং সিস্টেম ঠিক রাখতে অবশ্যই টায়ার প্রেশার যাচাই করা দরকার। বাইক এক্সপার্টদের অনুযায়ী সপ্তাহে অন্তত এক থেকে দুইবার টায়ার প্রেশার মাপা বাইকের জন্য বেশ জরুরি।মোটরসাইকেলের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশের উপর নির্ভর করে অনেক কিছুই। অতএব, আরামদায়ক রাইডিং নিশ্চিত করতে টায়ারের সঠিক যত্ন আবশ্যক।

অনুরূপ খবর

  • Maintenance & Care Tips

    মোটরসাইকেল চেইনের যত্নঃ ১০টি ক্লিনিং, লুব্রিকেশন এবং অ্যাডজাস্টমেন্ট টিপস

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    বাইক তেল বেশি খাচ্ছে এটি বাইকার কিভাবে বুঝতে পারবেন?

    time
    3 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    মোটরবাইকের জন্য ৫ টি সেরা ইঞ্জিন অয়েল ব্র্যান্ড এর সম্পর্কে আলোচনা

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    ফিল্টার প্রতিস্থাপন ছাড়াই ইঞ্জিন তেল পরিবর্তন করার উপায়

    time
    3 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    মোটরসাইকেলের শব্দ কমাতে ৫ টি কার্যকরী টিপস

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    ওয়াইডার টায়ার ব্যবহার: ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    কীভাবে বাইকের চাকা, রিম, হাব এবং স্পোক নির্বাচন করবেন?

    time
    5 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    শীতকালে বাইকের যত্ন কিভাবে নিতে হবে?

    time
    3 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    মোটরসাইকেল চুরি প্রতিরোধের টিপস

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    শিশুদের বাইকে চড়ার সতর্কতামূলক নির্দেশনাবলী

    time
    2 মিনিটে পড়া যাবে

সর্বশেষ গাড়ির রিভিউ

  • Suzuki Alto K10 2015

    Hatchback

    ৳ 800K - 1.2M

  • Toyota Aqua 2014

    Hatchback

    ৳ 1.5M - 1.6M

  • Suzuki Swift 2017

    Hatchback

    ৳ 1.7M - 2.2M

  • Toyota Vitz 2017

    Hatchback

    ৳ 1.8M - 2.3M

  • Nissan Leaf 2014

    Hatchback

    ৳ 4M - 6M

  • Mitsubishi Montero 2015

    SUV & 4X4

    ৳ 6.5M - 8.6M

  • Suzuki Wagon R 2018

    Hatchback

    ৳ 750K - 1.1M

  • Honda Civic 2019

    Saloon & Sedan

    ৳ 3.5M - 4.5M

  • Land Rover Defender 2020

    SUV & 4X4

    ৳ 14M - 18M

  • Mitsubishi Lancer 2017

    Saloon & Sedan

    ৳ 2.5M - 3M

  • Toyota Axio 2016

    Saloon & Sedan

    ৳ 1.8M - 2.4M

  • Toyota Premio G Superior 2018

    Saloon & Sedan

    ৳ 2.3M - 3M

সর্বশেষ বাইকের রিভিউ

  • Hero Ignitor 125 2020 IBS

    ৳ 115.7K - 128.5K

  • Honda X-Blade 160 ABS

    ৳ 194.9K - 216.5K

  • Honda Livo 110 Drum

    ৳ 107.9K - 119.9K

  • Keeway TXM 150

    ৳ 161.1K - 179K

  • Suzuki Gixxer Monotone

    ৳ 182K - 192K

  • Suzuki Gixxer SF Matt Plus

    ৳ 315K - 350K

  • Yamaha R15 S

    ৳ 409.5K - 455K

  • Hero Hunk 150 R Dual Disc ABS

    ৳ 166.1K - 232K

  • TVS Apache RTR 165 RP

    ৳ 297K - 360K

  • Suzuki Intruder FI ABS

    ৳ 247.5K - 320K

  • Suzuki Bandit 150

    ৳ 288K - 320K

  • KTM RC 125

    ৳ 333K - 566K

hero

Bikroy এ মাত্র ২ মিনিটে আপনার গাড়ি বা মোটরবাইকের বিজ্ঞাপন দিন!