বাংলাদেশে ফুয়েল কোয়ালিটি ও ঠান্ডা আবহাওয়া ইঞ্জিন পারফরম্যান্সকে কীভাবে প্রভাবিত করে

বাংলাদেশের অনেক রাইডারই ফুয়েল কোয়ালিটিকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এটা একটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় যখন সমস্যাগুলো শুরু হয়। লো ফুয়েল কোয়ালিটির কারণে অনেক সময় ইঞ্জিন ধীরে স্টার্ট নেয়, মাইলেজ কমে যায় এবং পারফরম্যান্স ড্রপ করে। আপনি ভাবতে পারেন যে এগুলো ট্রাফিক ও ওভারঅল ইঞ্জিন হেলথের কারণে হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এই ইস্যুগুলোতে ফুয়েল কোয়ালিটি একটি বড় ভূমিকা পালন করে।
ফুয়েল কোয়ালিটি ইঞ্জিন পারফরম্যান্সকে কীভাবে প্রভাবিত করে
একই স্টেশন থেকে সবসময় ফুয়েল নিলেও ফুয়েলের কোয়ালিটিতে পার্থক্য দেখা যায়। গরমের দিনে ইঞ্জিন কোনোভাবে এসব পার্থক্য সামলে নেয়। খুব বেশি সমস্যা বোঝা যায় না। কিন্তু শীত এলেই সমস্যা ধরা পড়ে। বাংলাদেশে শীত খুব বেশি না পড়লেও এই অল্প শীতেই বাজে কোয়ালিটির ফুয়েল ঠিকভাবে বার্ন হয় না। তাই সকালে স্টার্ট দেওয়ার পর ইঞ্জিনটা কেমন যেন হার্ড লাগে। অ্যাক্সেলারেশন স্মুথ হয় না। থ্রোটল প্রেস করলেও একটু দেরি করে রেসপন্স আসে, যেটা আসলে হওয়ার কথা না।
ঠান্ডা আবহাওয়া ইঞ্জিন পারফরম্যান্সকে কীভাবে প্রভাবিত করে
ঠান্ডা আবহাওয়া গাড়ি ও বাইকের জন্য আরো বেশি সমস্যা তৈরি করে। রাতের ঠান্ডায় ইঞ্জিন অয়েল ঘন হয়ে যায়, বিশেষ করে ভোরে বা সকালে। তখন ইঞ্জিনকে স্বাভাবিকভাবে চলতে একটু বেশি কষ্ট করতে হয়। অয়েল পুরোপুরি ঘুরে না আসা পর্যন্ত সবকিছু একটু আনরেসপন্সিভ লাগে। এর সঙ্গে যোগ হয় ঠান্ডা বাতাস। ঠান্ডা বাতাস এয়ার-ফুয়েল মিক্সেও প্রভাব ফেলে। আর যদি ফুয়েল কোয়ালিটি ভালো না হয়, তাহলে দহন (Combustion) ঠিকমতো হয় না।
এই সময়েই ড্রাইভাররা ইঞ্জিন পারফরম্যান্সে পরিবর্তনগুলো দেখতে শুরু করেন। ইঞ্জিনের ওভারঅল পারফরম্যান্স ড্রপ করে আর শর্ট ট্রিপগুলো আগের মতো স্মুথ মনে হয়। ড্রাইভাররা এগুলোকে সাময়িক সমস্যা ভেবে ইগনোর করে থাকেন। তবে দীর্ঘমেয়াদে এগুলো ইঞ্জিন হেলথের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
আপনি কী করতে পারেন
কিছু সাধারণ অভ্যাসের মাধ্যমেই এই সমস্যাগুলো কমিয়ে আনা যায়। একটু বেশি ড্রাইভ করা লাগলেও এমন স্টেশন থেকেই রিফুয়েল করুন যেগুলোকে ভরসাযোগ্য মনে করা হয়। এমন ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন যা আপনার গাড়ি ও বাংলাদেশের ক্লাইমেট উভয়ের জন্যই ভালো। বেশি মোটা ইঞ্জিন অয়েল লোকাল কন্ডিশনে ভালো পারফর্ম করে না। ইঞ্জিন স্টার্ট করার পর ড্রাইভ শুরু আগে কিছু মুহুর্তের জন্য সেটেল ডাউন হতে দিন।
উপসংহার
বাংলাদেশে ইঞ্জিন পারফরম্যান্সের ওপর ফুয়েল কোয়ালিটি আর শীতের প্রভাব নীরবে কাজ করে। আমরা বেশিরভাগ সময় রাস্তা বা ট্রাফিককেই দোষ দিই। সত্যি বলতে, সেগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।
কিন্তু ফুয়েল সিলেকশন আর শীতের সময় একটু বাড়তি যত্ন নেওয়া, এগুলো আমাদের হাতেই আছে। এভাবে আমরা একটু সচেতন হলেই ইঞ্জিন ভালো থাকবে, আর দীর্ঘমেয়াদে খরচও কম হবে।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১. বাংলাদেশে কী শীতের সময় মাইলেজ কম পাওয়া যায়?
হ্যাঁ, বাংলাদেশের মতো হালকা শীতেও অয়েল ফ্লো আর কম্বাসশনের উপর প্রভাব পড়ার কারণে মাইলেজ কিছুটা কম পাওয়া যায়।
২. বাজে ফুয়েল কোয়ালিটিতে কি ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়?
হ্যাঁ, অনেক দিন থেকে বাজে ফুয়েল কোয়ালিটি ব্যবহার করলে ইঞ্জিন ডিপোজিট জমে এবং এফিশিয়েন্সি কমে যায়।
৩. শীতের সময় ইঞ্জিন স্লো হয়ে যায় কেন?
কারণ কোল্ড স্টার্টে বেশি পরিমাণ ফুয়েল লাগে এবং ইঞ্জিন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পৌছাতে বেশি সময় নেয়।
৪. ঠান্ডা আবহাওয়ায় কী ইঞ্জিন আগে ওয়ার্ম আপ করা দরকার?
হ্যাঁ, কিছুটা ওয়ার্ম আপ করে নিলে ইঞ্জিন অয়েল ঠিকভাবে সার্কুলেট হতে পারে।
৫. শীতের সিজনে কী ফুয়েল কোয়ালিটি গুরুত্বপূর্ণ?
হ্যাঁ, গরমকালের তুলনায় শীতের সময়ে ফুয়েল কোয়ালিটির কারণে ইঞ্জিনে বিভিন্ন সমস্যা বেশি বেশি হয়।







































