150 সিসি মোটরসাইকেল
বাইক কেনার ক্ষেত্রে প্রথমেই হয়তো বাইকের ইঞ্জিন পারফরম্যান্স, আউটলুক, ব্রেকিং সিস্টেম ইত্যাদি বিষয়ে আমাদের নজর থাকে সবচেয়ে বেশি। ইঞ্জিন পারফরম্যান্স বিবেচনা করতে গেলেই মাথায় কাজ করে, বাইকটা কতো সিসি-র? যদি হয় 150 সিসি মোটরসাইকেল, তরুণদের মধ্যে উত্তেজনার শেষ নেই। তবে প্রায়ই একটা অসুবিধার কথা শুনা যায়, “বেশি সিসি বাইক মানে কম পরিমাণ মাইলেজ”। তবে সব 150 সিসি মোটরসাইকেল একরকম নয়। তাই আজকে আমরা জানবো সেসব 150 সিসি মোটরসাইকেলের ব্যবহার নিয়ে,
যেগুলোর মাইলেজ ও অন্যান্য ফিচারস নিয়ে ভালো ও সন্তোষজনক রিভিউ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের আলোচিত ৫ টি 150 সিসি মোটরসাইকেল
বাংলাদেশে তরুণদের বাইক বাজারের সর্বোচ্চ সেগমেন্ট এই 150 সিসি মোটরসাইকেল। আমরা যদি সারা দেশে একটি গবেষণা চালাই তাহলে দেখতে পাবো 150 সিসি মোটরসাইকেল-গুলোর গ্রাহক সংখ্যা, অন্যান্য সিসি-র গ্রাহক সংখ্যা থেকে আগের চেয়ে কয়েকগুন বেড়েছে। আশা করি,
BikesGuide-এর আজকের ব্লগ পড়ে জেনে নিতে পারবেন বাংলাদেশের আলোচিত ৫ টি 150 সিসি মোটরসাইকেল-গুলোর বিস্তারিত বর্ণনা।
ইয়ামাহা এফজেডএস ভি২
ইয়ামাহা এফজেডএস ভি২ হলো ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের খুবই জনপ্রিয় একটি স্ট্যান্ডার্ড টাইপ বাইক। ‘ইমাহা’ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত। আকর্ষণীয় কালার কম্বিনেশন, স্মার্ট ফেয়ারিং এবং আপডেটেড বডি স্ট্রাকচারের সমন্বয়ে এটি অসাধারণ একটি বাইক। বাইকটির ডিজাইন অনেকটা স্পোর্টি লুকিং, তাই অনেকেই এটিকে স্পোর্টস বাইক মনে করেন, আদতে এটি একটি দুর্দান্ত কোয়ালিটির স্ট্যান্ডার্ড বাইক। 150 সিসি মোটরসাইকেলের ব্যবহারকারীদের রিভিউ অনুযায়ী, বর্তমানে ইমাহা-র (এফজেডএস মডেল) 150 সিসি মোটরসাইকেল-গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো মাইলেজ প্রদানকারী বাইক ইয়ামাহা এফজেডএস ভি২। বাইকটিতে ১৪৯.০ সিসি ডিসপ্লেসমেন্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে যা এয়ার-কুল্ড, ৪-স্ট্রোক এবং সিঙ্গেল-সিলিন্ডার ফিচার বিশিষ্ট। ইঞ্জিনের স্পেশালিটি হলো এটির সিঙ্গেল ওভারহেড ক্যামস্যাফট (SOHC) এবং ব্লু-কোর ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিন ৮০০০ আরপিএমে ১২.৮ বিএইচপি সর্বোচ্চ পাওয়ার এবং ৬০০০ আরপিএমে ১২.৮০ এনএম সর্বোচ্চ টর্ক জেনারেট করতে পারে। বাইকটির সামনের দিকে বিফি ৪১ মিমি-এর অয়েল ডাম্পড হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক কয়েল স্প্রিং সাসপেনশন এবং পিছনের দিকে সুইং আর্ম অ্যাডজাস্টেবল মনো-ক্রস সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটির সামনের চাকায় ডুয়েল-পিস্টন ক্যালিপার সহ একটি ২৬৭ মিমি-এর ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনের চাকায় ১৩০ মিমি-এর ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে।জানার জন্য আরও পড়ুন -
ইয়ামাহা এফজেডএস ভি২ রিভিউ টিভিএস অ্যাপাচি আরটিআর ১৫০
টিভিএস অ্যাপাচি আরটিআর ১৫০ এর বিশেষত্ব হলো এর বডি ডিজাইন, বাইকটির ফ্রন্ট লুক এতোটাই আকর্ষণীয় যে অনেক তরুনদের কাছে সেরা ১৫০ সিসি টিভিএস মোটরসাইকেল হিসেবে এটি-ই পছন্দের শীর্ষে থাকে।বাইকটিতে একটি ৪-স্ট্রোক, এয়ার কুলড ইঞ্জিন যোগ করা হয়েছে। এর টপ স্পিড প্রায় ১৩৫ কিমি/ঘন্টা ও মাইলেজ প্রায় ৫০ কিমি/লিটার। বাইকের সামনের চাকায় ২৭০ মিমি হাইড্রোলিক। অন্যদিকে রিয়ার ব্রেকের ক্ষেত্রে ১৩০ মিমি ড্রাম ব্রেক রয়েছে। চাকায় নিদিষ্ট পরিমান হাওয়া দিয়ে বাইক রাইড করলে ব্রেকিং এ অনেক ভালো ফিডব্যাক পাওয়া যায়। ফ্রন্ট সাসপেশনে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও রিয়ার সাসপেশন ডাবল ইউনিট সাথে সুইং আর্ম রয়েছে। শক অবজারভার হিসেবে টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৫০ এডজাস্টেবল ৫ স্টেপ-এ এসেম্বল রয়েছে। ভাংগা রাস্তায় বাইকটির পেছনের সাসপেনশন দারুন সাপোর্ট দেয়।
টিভিএস অ্যাপাচি আরটিআর-এই লিংকে আরটিআর-এর অন্যান্য মডেলগুলোর বিস্তারিত জানতে পারবেন।
বাজাজ পালসার ১৫০
বাজাজ পালসার ১৫০, 150 সিসি মোটরসাইকেল-এর মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। হাই-ক্লাস সোসাইটির মানুষ এই বাজাজ মোটরসাইকেল তাদের প্রতিদিনের পরিবহণ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। আলোচিত ৫ টি 150 সিসি মোটরসাইকেল-এর মধ্যে এর অবস্থান বেশ সুপরিচিত।এই বাইকে রয়েছে ১৪৯.৫ সি.সি. ডিসপ্লেসমেন্টের একটি এয়ার কুল্ড, ৪ স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ডিটিএসআই ইঞ্জিন, এটি ১৪ পিএস শক্তি ও ১৩.৪ এনএম টর্ক উৎপাদন করতে পারে। ইঞ্জিন পাওয়ার ট্রান্সমিশনের জন্য আছে ৫-স্পিড গিয়ারবক্স সাথে ডিজিটাল স্পিডোমিটার। বাইকের সামনে রয়েছে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন সিস্টেম পেছনে রয়েছে টুইনশক সাসপension সাথে ৫-ওয়ে অ্যাডজাস্টেবল নাইট্রক্স শক অ্যাবসোর্বার রয়েছে। বাজাজ ১৫০ বাইকের চাকা ভালো মানের ডাবল ডিস্ক দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সামনের চাকা ডিস্ক, এবং পিছনের চাকা ড্রাম বেসড। পিছনের চাকার রেস্পন্স আরো ভালো হওয়ার জন্য ড্রাম ব্রেকের সাথে রেয়ার ডিস্ক সংযুক্ত করা হয়েছে।জানার জন্য আরও পড়ুন - বাজাজ পালসার ১৫০ রিভিউ
হিরো হাঙ্ক ডাবল ডিস্ক ম্যাট ব্ল্যাক
হিরো হাঙ্ক ডাবল ডিস্ক ম্যাট ব্ল্যাক, হিরো ব্র্যান্ডের একটি এলিগেন্ট ডিজাইনের স্পোর্টসি-কমিউটার টাইপ বাইক। গর্জিয়াস ডিজাইনের সাথে মজবুত বডি স্ট্রাকচার এবং শক্তিশালী ইঞ্জিনের লং-লাস্টিং পারফরম্যান্স যেকোনো বাইকারকে মুগ্ধ করবে, আর তাই বাংলাদেশের আলোচিত ৫ টি 150 সিসি মোটরসাইকেল-গুলোর মধ্যে এই বাইককে নিঃসন্দেহে রাখা-ই যায়।বাইকটি ১৪.২ বিএইচপি @ ৮৫০০ আরপিএম সর্বোচ্চ পাওয়ার এবং ১২.৮ এনএম @ ৬৫০০ আরপিএম সর্বোচ্চ টর্ক প্রডিউস করতে সক্ষম। এই ইঞ্জিন এয়ার-কুলড, সিঙ্গেল-সিলিন্ডার এবং ৪-স্ট্রোক ধরণের। বাইকটির সামনের সাসপেনশনে টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার এবং পিছনের সাসপেনশনে সুইং আর্ম নিট্রক্স জিআরএস (গ্যাস রিজার্ভার) সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের এবং পিছনের উভয় চাকায় ডিস্ক টাইপ ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে।জানার জন্য আরও পড়ুন -
হিরো হাংক ডাবল ডিস্ক ম্যাট ব্ল্যাক রিভিউসুজুকি জিক্সার এসএফ এফআই এবিএস
বাইকটিতে যেমন একটি স্পোর্টবাইকের মতোই সমস্ত ফিচার দেওয়া হয়েছে, তেমনি বাইকটিকে করা হয়েছে জ্বালানি সাশ্রয়ী। এই সুবিধাগুলোর জন্যই অনেকেই দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য বাইকটিকে পছন্দের শীর্ষে রাখেন। বাইকটির অ্যাগ্রেসিভ লুকিং-এর কারণে এর টার্গেট কাস্টমার মূলত তরুণেরা। 150 সিসি মোটরসাইকেলের ব্যবহারকারীদের মধ্যে সুজুকি লাভারসদের টপ চয়েজ এই বাইকটি। বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৫৫ সিসির একটি শক্তিশালী ইঞ্জিন, যা ১৪.১ পিএস @ ৮০০০ আরপিএম পাওয়ার এবং ১৪ এনএম @ ৬০০০ আরপিএম টর্ক দিতে সক্ষম। এতে আছে একটি বেসিক ওয়েট মাল্টি-প্লেট ক্লাচ সিস্টেম। এছাড়াও বাইকটিতে আছে ৫-স্পিড গিয়ারবক্স। বাইকটির টপ স্পিড প্রায় ১২৫ কিমিঃ/ঘন্টা। বাইকটির সামনে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন এবং পিছনে দেওয়া হয়েছে মনোশক সাসপেনশন। ব্রেকিং সিস্টেম হিসেবে উভয় চাকায় ডিস্ক ব্রেক (সামনের চাকায় এবিএস) ব্যবহার করা হয়েছে।জানার জন্য আরও পড়ুন -
সুজুকি জিক্সার এসএফ এফআই রিভিউ পরিশেষে
150 সিসি মোটরসাইকেল-গুলোর মধ্যে অনেকগুলোই বাংলাদেশে ভালো জনপ্রিয়, আমরা চেষ্টা করেছি বহুল আলোচিত ও ব্যবহৃত ৫ টি 150 সিসি মোটরসাইকেল-এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরার। আশা করি, এই ব্লগ পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন। এছাড়াও
বিভিন্ন ধরণের 150 সিসি মোটরসাইকেলের দাম জানতে ব্রাউজ করুন Bikroy এ।