বাইকের ক্লাচ রিপ্লেসমেন্টের এই লক্ষণগুলো উপেক্ষা করবেন না

Humyra Sharmind Alam
time
4 মিনিটে পড়া যাবে
feature image

ক্লাচ হলো মোটরসাইকেল বা গাড়ির একটি গুরুত্বপূর্ণ যত্রাংশ, যার সাহায্যে ইঞ্জিন ও গিয়ারবক্সের সংযোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বাইকের ক্লাচ প্যাডেল চাপলে ইঞ্জিনের পাওয়ার ট্রান্সমিশন বন্ধ থাকে, এতে গিয়ার পরিবর্তন করা সহজ হয়। আর প্যাডেল ছাড়লে ইঞ্জিনের পাওয়ার ট্রান্সমিশন চলতে থাকে। ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনের বাইক এবং গাড়িতে ক্লাচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন কারণে ক্লাচ প্লেট ক্ষয় কিংবা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। সময়ের সাথে সাথে এবং নিয়মিত ব্যবহারে, ক্লাচের ফ্রিকশন প্যাড, স্প্রিং এবং প্লেট ক্ষয় হতে থাকে। এই ব্লগে কিছু লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলো দেখে সহজেই বুঝতে পারবেন ক্লাচ রিপ্লেস করার সময় হয়ে গেছে।

বাইকের ক্লাচ প্রতিস্থাপন করা দরকার - এই লক্ষণগুলো উপেক্ষা করবেন না

ক্লাচ সমস্যার কারণে গিয়ারবক্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এতে ইঞ্জিনে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং রাস্তায় হঠাৎ বাইক ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়। যখন বুঝবেন আপনার বাইকে স্মুথ গিয়ার শিফট হচ্ছে না, ক্লাচ লিভার ভারী লাগছে কিংবা স্লিপ করছে, অস্বাভাবিক শব্দ হচ্ছে, তখন দ্রুত মোটরসাইকেল মেকানিক দেখান।

১. গিয়ার স্লিপ করা

ক্লাচ ডিস্ক ক্ষয়ে গেলে গিয়ার স্লিপ সমস্যা দেখা দেয়। গিয়ার ঠিকভাবে এনগেজ না হলে এবং হাই-স্পিডে আরপিএম অনুযায়ী স্পিড না উঠলে বুঝবেন গিয়ার স্লিপ করছে। ক্লাচ প্লেট বেশি ক্ষয়ে গেলে প্রতিস্থাপন করা উচিত।

২. গিয়ার অ্যাক্সিলারেশনে পাওয়ার লস হলে

দীর্ঘ সময় ব্যবহারে ক্লাচ প্লেটগুলো ঘর্ষণের ফলে পাতলা হয়ে যায়। ফলে ক্লাচ পুরোপুরি আঁকড়ে ধরতে পারে না, তাই অ্যাক্সিলারেশনে পাওয়ার লস হয়। আবার ইঞ্জিনের তেল লিক হলে ক্লাচ প্লেট তৈলাক্ত হয়ে যায়। ফলে ক্লাচ স্লিপ করে, পাওয়ার লস হয়।

৩. ক্লাচ লিভার বেশি স্টিফ কিংবা লুজ মনে হলে

সাধারণত ক্লাচ ক্যাবলে মরচে ধরলে, কিংবা জ্যাম হয়ে গেলে ক্লাচ লিভার শক্ত হয়ে যায়। আবার ক্লাচ ক্যাবল শুকিয়ে গেলে কিংবা ক্লাচ স্প্রিং দুর্বল হয়ে গেলে ক্লাচ লিভার লুজ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ক্লাচ প্লেট পরিবর্তন করাই সমাধান, দীর্ঘদিন উপেক্ষা করলে পুরো ক্লাচ সিস্টেম ড্যামেজ হতে পারে।

৪. গিয়ার চেঞ্জ করতে সমস্যা হলে

ক্লাচ প্লেটের লাইনিং পাতলা হয়ে গেলে গিয়ার এনগেজ হতে সমস্যা হয়। এছাড়াও ভুল কেবলের টেনশন, হাইড্রলিক ফ্লুইডের সমস্যা, এবং প্লেটে আটকে থাকা ময়লার কারণেও গিয়ার এনগেজ হতে সমস্যা হয়। এই সমস্যা হলে, বাইক চালানোর সময় ক্লাচ ছাড়লে বাইক হঠাৎ ঝাঁকি খায়, ফলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ক্লাচ অ্যাডজাস্ট এবং প্লেট পরিষ্কার করার পরও ঠিক না হলে, প্রতিস্থাপন করাই ভালো।

৫. ক্লাচ ধরার সময় অস্বাভাবিক শব্দ হলে

ক্লাচ প্লেটে অসমান ক্ষয় বা বিয়ারিংয়ের সমস্যার কারণে ঘর্ষণে অস্বাভাবিক শব্দ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও স্প্রিং দুর্বল হলে ক্লাচ স্লিপ করে এবং শব্দ হয়। ভেজাল বা ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েলে ব্যবহারে ক্লাচ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে অস্বাভাবিক শব্দ হতে পারে। এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে ক্লাচ প্লেট, স্প্রিং এবং বিয়ারিং সব একসাথে বদলাতে হয়।

৬. বাইক চালানোর সময় ক্লাচ এনগেজে অতিরিক্ত ভাইব্রেশন হলে

ক্লাচ প্লেটগুলো অতিরিক্ত গরমে পুড়ে গেলে প্লেটের সারফেসে অসমান ক্ষয় সৃষ্টি হয়, এক্ষেত্রে ক্লাচ এনগেজ করলেই ভাইব্রেশন হয়। এছাড়াও ক্লাচের প্রেশার প্লেটের স্প্রিং দুর্বল হলে, এবং ক্লাচ হাবের নাট লুজ হয়ে গেলে, ভাইব্রেশন হয়।

৭. অপ্রত্যাশিত ফুয়েল কনজাম্পশন বেড়ে গেলে

ক্লাচ পারফেক্ট ভাবে কাজ না করলে ইঞ্জিনের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এক্ষেত্রে ইঞ্জিন বেশি আরপিএম জেনারেট করে, ফলে বেশি জ্বালানি পোড়ে।

৮. স্বাভাবিক রাইডিং-এ পোড়া গন্ধ পেলে

সাধারণত দীর্ঘক্ষণ হাফ-ক্লাচ চেপে রাখলে, ক্লাচ প্লেট আর প্রেসার প্লেটের মধ্যে ফ্রিকশন হয়ে তাপ উৎপন্ন হয়, এতে পোড়ার গন্ধ সৃষ্টি হয়। তবে স্বাভাবিক রাইডিং-এ পোড়া গন্ধ পেলে ক্লাচ চেক করা প্রয়োজন।

পরিশেষে

ক্লাচের সমস্যা ধীরে ধীরে শুরু হয়। তাই সময়মতো সমস্যা ধরতে না পারলে বড় খরচ কিংবা দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলো বা ক্লাচের যেকোনো অস্বাভাবিকতা মনে হলে, দ্রুত মেকানিকের পরামর্শ নিন। নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন, ক্লাচ অ্যাডজাস্ট ঠিক রাখা এবং হাই-হিট পরিস্থিতি এভয়েড করে ক্লাচ দীর্ঘ দিন ঠিক রাখা যায়।

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

১. ক্লাচ প্রব্লেম হলে বাইকে সাধারণত কী ধরনের সমস্যা হয়?

গিয়ার স্লিপ করে, স্পিড কমে যায়, ফুয়েল কনজাম্পশন বেড়ে যায়, ক্লাচ লিভার শক্তি কিংবা ঢিলা হয়ে যায়, ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।

২. বাইক স্বাভাবিক স্পিড না পেলে, এটা ক্লাচের কি ধরণের সমস্যা থেকে হতে পারে?

এটা মূলত ক্লাচ স্লিপ করার লক্ষণ। ইঞ্জিন পাওয়ার ঠিক আছে কিন্তু চাকা ঠিকমতো টর্ক পাচ্ছে না। ক্লাচ প্লেট বেশি ক্ষয়ে গেলে এই সমস্যা হয়।

৩. সাধারণত কত কিলোমিটার চালালে ক্লাচ প্লেট বদলাতে হয়?

রাইডিং স্টাইল, ট্র্যাফিকের অবস্থা এবং বাইকের মডেল অনুসারে সাধারণত ২৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ কিলোমিটার চালানোর পর ক্লাচ প্লেট বদলানো উচিত।

৪. বাইক রাইডিং সময় পোড়া গন্ধ আসলে, এটা ক্লাচের কম সমস্যার জন্য হতে পারে?

সাধারণত দীর্ঘক্ষণ হাফ-ক্লাচ চেপে রাখলে, ক্লাচ প্লেট আর প্রেসার প্লেটের মধ্যে ফ্রিকশন হয়ে তাপ উৎপন্ন হয়, এতে পোড়ার গন্ধ সৃষ্টি হয়।

৫. ক্লাচে সমস্যা থাকা অবস্থায় কি বাইক চালানো যাবে?

যাবে, তবে স্পিডে চালালে ইঞ্জিন আর গিয়ারবক্সের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।

অনুরূপ খবর

  • Maintenance & Care Tips

    ইঞ্জিনের আয়ু বাড়াতে নিয়মিত অয়েল পরিবর্তন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

    time
    3 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    বাইকের ক্লাচ রিপ্লেসমেন্টের এই লক্ষণগুলো উপেক্ষা করবেন না

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    বাংলাদেশে শীতের জন্য আপনার গাড়িকে কীভাবে প্রস্তুত করবেন

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    দীর্ঘ ছুটিতে আপনার মোটরসাইকেল বা গাড়ি কীভাবে সংরক্ষণ করবেন

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    ৫টি লক্ষণ যা দেখে বুঝবেন আপনার গাড়ির তাৎক্ষণিক সার্ভিসিং প্রয়োজন

    time
    3 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    টিউবলেস বনাম টিউব টায়ারঃ কোনটি নির্বাচন করবেন এবং কেন?

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    Common Bike Electrical Problems and How to Fix Them

    time
    4 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    ব্যয়বহুল আপগ্রেড ছাড়াই কীভাবে গাড়ির ফুয়েল এফিশিয়েন্সি বাড়াবেন

    time
    3 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    গাড়ির ইন্টেরিয়র ডিটেইলিং টিপসঃ কেবিন রাখুন ফ্রেশ ও স্ক্র্যাচ-ফ্রি

    time
    3 মিনিটে পড়া যাবে
  • Maintenance & Care Tips

    স্পোর্টস মোটরবাইকের জ্বালানি এফিশিয়েন্সি বাড়ানোর উপায়

    time
    3 মিনিটে পড়া যাবে

সর্বশেষ গাড়ির রিভিউ

  • Suzuki Alto K10 2015

    Hatchback

    ৳ 800K - 1.2M

  • Toyota Aqua 2014

    Hatchback

    ৳ 1.5M - 1.6M

  • Suzuki Swift 2017

    Hatchback

    ৳ 1.7M - 2.2M

  • Toyota Vitz 2017

    Hatchback

    ৳ 1.8M - 2.3M

  • Nissan Leaf 2014

    Hatchback

    ৳ 4M - 6M

  • Mitsubishi Montero 2015

    SUV & 4X4

    ৳ 6.5M - 8.6M

  • Suzuki Wagon R 2018

    Hatchback

    ৳ 750K - 1.1M

  • Honda Civic 2019

    Saloon & Sedan

    ৳ 3.5M - 4.5M

  • Land Rover Defender 2020

    SUV & 4X4

    ৳ 14M - 18M

  • Mitsubishi Lancer 2017

    Saloon & Sedan

    ৳ 2.5M - 3M

  • Toyota Axio 2016

    Saloon & Sedan

    ৳ 1.8M - 2.4M

  • Toyota Premio G Superior 2018

    Saloon & Sedan

    ৳ 2.3M - 3M

সর্বশেষ বাইকের রিভিউ

  • Hero Ignitor 125 2020 IBS

    ৳ 115.7K - 128.5K

  • Honda X-Blade 160 ABS

    ৳ 194.9K - 216.5K

  • Honda Livo 110 Drum

    ৳ 107.9K - 119.9K

  • Keeway TXM 150

    ৳ 161.1K - 179K

  • Suzuki Gixxer Monotone

    ৳ 182K - 192K

  • Suzuki Gixxer SF Matt Plus

    ৳ 315K - 350K

  • Yamaha R15 S

    ৳ 409.5K - 455K

  • Hero Hunk 150 R Dual Disc ABS

    ৳ 166.1K - 232K

  • TVS Apache RTR 165 RP

    ৳ 297K - 360K

  • Suzuki Intruder FI ABS

    ৳ 247.5K - 320K

  • Suzuki Bandit 150

    ৳ 288K - 320K

  • KTM RC 125

    ৳ 333K - 566K

hero

Bikroy এ মাত্র ২ মিনিটে আপনার গাড়ি বা মোটরবাইকের বিজ্ঞাপন দিন!