মোটরসাইকেলের সাসপেনশন সেটআপ কীভাবে অ্যাডজাস্ট করবেন

মোটরসাইকেলের সাসপেনশন সেটআপ ঠিক থাকলে রাইডে সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। এতে করে বাইক অনেক সহজেই হ্যান্ডেল করা যায়। তবে অনেক রাইডারই বিষয়টিকে জটিল ভেবে সাসপেনশন অ্যাডজাস্ট করেন না। কেমন হয় যদি আমরা বলি যে বিষয়টি যতটা কঠিন মনে হয়, আসলে ততটা কঠিন নয়। তাই এই আর্টিকেলে আপনার কমফোর্ট অনুযায়ী আপনার বাইকের সাসপেনশন অ্যাডজাস্ট করতে গাইড করবো আমরা।
১. স্যাগ সেট করুন
প্রথমেই আপনার মোটরসাইকেলের স্যাগ চেক করুন। স্যাগ মানে হচ্ছে আপনি মোটরসাইকেলে বসলে সেটি আসলে কতোটা নিচু হয়ে যায়। স্যাগ বেশি নিচু হওয়া উচিত নয়, কারণ এতে সাসপেনশন অনেক সফট ও অস্থিতিশীল হয়ে যাবে। আবার স্যাগ বেশি উচুঁ হলে রাইড হয়ে উঠবে আনকমফোর্টেবল। তাই একটি প্রিলোড অ্যাডজাস্টার ব্যবহার করে তা একটু অ্যাডজাস্ট করে ফেলুন। এরপর বাইকে বসলেই আপনি বুঝতে পারবেন স্যাগ লেভেল ঠিক আছে কি না।
২. কমপ্রেশন অ্যাডজাস্ট করুন
আপনি যখন কোনো অসমতল রাস্তা দিয়ে রাইড করেন, সাসপেনশন চেপে যায়, তাই না? কমপ্রেশন কন্ট্রোল করে যে আপনার সাসপেনশন ঠিক কতোটা দ্রুত চেপে যাবে। কমপ্রেশন বেশি শক্ত বা নরম হলে বাইক বেশ আনকমফোর্টেবল ফিল হবে। তাই অল্প কিছু ক্লিকে কমপ্রেশন অ্যাডজাস্ট করে ফেলুন। কমপ্রেশন আপনার প্রিফারেন্স অনুযায়ী লেভেলে এসেছে কি না তা বুঝতে প্রতিবার অ্যাডজাস্ট করার পর ছোট একটি রাইড নিয়ে দেখুন।
৩. রিবাউন্ড ড্যাম্পিং সেট করুন
রিবাউন্ড বলতে বোঝায় কতো দ্রুত আপনার সাসপেনশন উপরে উঠে আসছে। রিবাউন্ড যদি বেশি দ্রুত হয়, তাহলে বাইক অস্থিতিশীল মনে হবে। আবার রিবাউন্ড বেশি ধীরে হলে বাইক বেশি ভারী মনে হবে। তাই এক এক করে অ্যাডজাস্ট করে দেখে নিন যে সেটিংস ঠিক আছে কি না। যদিও, সব ধরণের বাইকে কমপ্রেশন/রিবাউন্ড অ্যাডজাস্ট করা যায় না। কম্যুটার বাইকগুলোতে শুধু প্রিলোড অ্যাডজাস্টমেন্ট অপশন থাকে।
৪. পেছনের শক চেক করুন
আপনার বাইকের সামনের সাসপেনশনের মতো পেছনের শক’ও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক রাইডারই পেছনের শক ইগনোর করেন। সামনের সাসপেনশনের মতো একইভাবে আপনি পেছনের শকের কমপ্রেশন ও রিবাউন্ড অ্যাডজাস্ট করে নিতে পারেন। প্রথমে চেষ্টাতেই হয়তো আপনার জন্য পারফেক্ট সেটিং আপনি খুজে পাবেন না। তবে কয়েকবার চেষ্টা করলে আপনি অবশ্যই নিজের প্রিফারেন্স অনুযায়ী সঠিক অ্যাডজাস্টমেন্ট লেভেল বুঝে যাবেন।
৫. একটি টেস্ট রাইড নিয়ে দেখুন
প্রতিবার সাসপেনশন সেটআপ পরিবর্তন করার পর একটি ছোট রাইড নিয়ে দেখুন। এখানে আমরা আরো একটি টিপ আপনাকে দিতে পারি। তা হলো, এমন একটি রোড সিলেক্ট করুন, যেটি আপনি রেগুলার ব্যবহার করেন। এতে করে আপনি অ্যাডজাস্টমেন্টের পর পরিবর্তন আপনি খুব সহজেই বুঝে যাবেন।
পরিসংহার
মোটরসাইকেল সাসপেনশনের ক্ষেত্রে কোনো একক ‘বেস্ট’ সাসপেনশন সেটআপ নেই। নিজের বাইকের জন্য কিছুটা সময় বের করে আপনার নিজের জন্য বেস্ট সাসপেনশন সেটআপটি জেনে নিতে হবে। আর একবার সঠিক সেটআপ পেয়ে গেলে, আপনার রাইড হবে আরো বেশি আরামদায়ক ও স্মুথ। আর এটি আপনি নিজে নিজেই করতে পারবেন। একটি সিম্পল সি-স্প্যানার দ্বারাই রিয়ার প্রিলোড অ্যাডজাস্ট করা যায়, যা অনেক ক্ষেত্রে বাইকের সাথেই দিয়ে দেয়া হয়।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১. মোটরসাইকেল সাসপেনশন কী অ্যাডজাস্ট করা যায়?
হ্যা, সাসপেনশনের কমপ্রেশন ও রিবাউন্ড অ্যাডজাস্ট করার মাধ্যমে সাসপেনশন অ্যাডজাস্ট করা যায়।
২. মোটরসাইকেল সাসপেনশন সেটআপ অ্যাডজাস্ট করবো কীভাবে?
সামনের ও পেছনের সাসপেনশনের কমপ্রেশন ও রিবাউন্ড লেভেল টুইক করার মাধ্যমে আপনি মোটরসাইকেল সাসপেনশন অ্যাডজাস্ট করতে পারবেন।
৩. আমার মোটরসাইকেলের সাসপেনশন এতো শক্ত কেন?
মোটরসাইকেল কমপ্রেশন লেভেল বেশি শক্ত হলে মোটরসাইকেল সাসপেনশন শক্ত মনে হতে পারে। তাই কমপ্রেশন কমিয়ে নিতে পারেন।
৪. আমার মোটরসাইকেল এতো অস্থিতিশীল কেন?
ভুল প্রিলোড ও রিবাউন্ডের কারণে অনেক সময় মোটরসাইকেল অস্থিতিশীল মনে হতে পারে। তাই প্রিলোড ও রিবাউন্ড অ্যাডজাস্ট করে নিন।
৫. মোটরসাইকেল সাসপেনশন কী আমি নিজেই অ্যাডজাস্ট করতে পারবো?
হ্যা, কোনো স্পেশাল টুলের সাহায্য ছাড়া খুব সহজেই আপনি মোটরসাইকেল সাসপেনশন অ্যাডজাস্ট করতে পারবেন। একটি সিম্পল সি-স্প্যানার দ্বারাই রিয়ার প্রিলোড অ্যাডজাস্ট করতে পারবেন, যা অনেক ক্ষেত্রে বাইকের সাথে দিয়ে দেয়া হয়।


































