১ - ২ লক্ষ টাকায় রানার মোটরবাইক সম্পর্কে আলোচনা
বাংলাদেশের বাইকের বাজারে রানার মোটরবাইকগুলো সাধারণ মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে যারা সাশ্রয়ী মূল্যে ভালো মানের বাইক খুঁজছেন। রানার ব্র্যান্ডটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারকারীদের আস্থা অর্জন করেছে, কারণ এই ব্র্যান্ডের বাইকগুলো শুধু দামের দিক থেকে সহজলভ্য নয়, পারফরম্যান্স, মাইলেজ এবং নির্ভরযোগ্যতার দিক থেকেও বেশ প্রশংসিত। শহরের জ্যাম কিংবা গ্রামের কাঁচা রাস্তা, রানারের বাইকগুলো সব ধরনের পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেয়। যারা ১ থেকে ২ লক্ষ টাকার মধ্যে একটি টেকসই এবং কার্যকর মোটরসাইকেল খুঁজছেন, রানারের এই মডেলগুলো তাদের জন্য আদর্শ হতে পারে। রানার মোটরবাইকগুলো তাদের শক্তিশালী ইঞ্জিন, আরামদায়ক সাসপেনশন, এবং উন্নত ব্রেকিং সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতিদিনের যাত্রাকে সহজ এবং নিরাপদ করে তোলে। চলুন জেনে নেই এমন পাঁচটি বাজেট রানার বাইক ২০২৪ সম্পর্কে-
Runner Cheeta
বাংলাদেশে রানার বাইকের মডেল এ Runner Cheeta আরেকটি সাশ্রয়ী মডেল, যা ১০০ সিসি ইঞ্জিন ক্ষমতার জন্য জনপ্রিয়। এই বাইকটির ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল-সিলিন্ডার ইঞ্জিনটি ৬.৯৭ কিলোওয়াট শক্তি উৎপাদন করে ৮০০০ আরপিএম-এ, যা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য বেশ উপযুক্ত। ৪-স্পীড ম্যানুয়াল গিয়ারবক্স বাইকটির গতি এবং চালনার সময় আরামদায়ক অভিজ্ঞতা প্রদান করে। বাইকটির মাইলেজ প্রায় ৬০-৬৫ কিমি প্রতি লিটার, যা এটিকে ফুয়েল সাশ্রয়ী করে তোলে। সামনের দিকে হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক সাসপেনশন এবং পিছনে কয়েল স্প্রিং সাসপেনশন থাকার কারণে এটি উঁচুনিচু রাস্তায় আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করে। ব্রেকিং সিস্টেম হিসেবে সামনের এবং পিছনের উভয় দিকে ড্রাম ব্রেক রয়েছে, যা মোটামুটি ভালো ব্রেকিং ক্ষমতা প্রদান করে। তবে বাইকটি সাধারণ কমিউটার বাইকের তুলনায় একটু ছোট। এর দৈর্ঘ্য ১৯৬০ মিমি, প্রস্থ ৭৭০ মিমি এবং উচ্চতা ১২৫০ মিমি। এর হুইলবেস ১২২০ মিমি এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৫০ মিমি। বাইকটির ফুয়েল ট্যাংক ১০ লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এবং ওজন ৯৬.২ কেজি, যা খুবই হালকা। তাই বাইকটি সহজে পরিচালনা করা যায়। Runner Cheeta 100cc এর সাশ্রয়ী মূল্য, ভালো মাইলেজ এবং টেকসই পারফরম্যান্স এটিকে বাজেটের মধ্যে একটি নির্ভরযোগ্য বাইক করে তুলেছে।
Runner Royal Plus V2
বাংলাদেশে রানার বাইকের মডেল-এ Runner Royal Plus V2 একটি জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী মূল্যের কমিউটার বাইক, যা শহরের রাস্তায় এবং দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য আদর্শ। এই বাইকটি কমফোর্ট, ভালো মাইলেজ এবং ব্যবহারিকতার দিক দিয়ে বিশেষভাবে প্রশংসিত। Runner Royal Plus V2 বাইকটি দেখতে খুবই সিম্পল এবং স্টাইলিশ। এর ফুয়েল ট্যাংক ডিজাইন করা হয়েছে আধুনিক স্টাইলে, যা বাইকটিকে একটি স্পোর্টি লুক দেয়। ফ্রন্ট এবং রিয়ার উভয় দিকেই উন্নত মানের হেডলাইট এবং টেইললাইট রয়েছে, যা রাতের বেলায় নিরাপদে চলাচল করতে সাহায্য করে। বাইকটির আসন প্রশস্ত এবং নরম, যা দীর্ঘ যাত্রায় আরামদায়ক অভিজ্ঞতা প্রদান করে। Runner Royal Plus V2-এর ইঞ্জিন হলো একটি ফোর-স্ট্রোক, এয়ার কুলড, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন যা ১১০ সিসি ক্ষমতার। এটি ৭৫০০ আরপিএম-এ সর্বাধিক ৮.০৪ বিএইচপি শক্তি উৎপন্ন করতে সক্ষম এবং ৫৫০০ আরপিএম-এ ৮ এনএম টর্ক প্রদান করে। বাইকটির ইঞ্জিন শক্তিশালী এবং মসৃণ পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে, যা যেকোনো দৈনন্দিন কাজের জন্য আদর্শ। ইঞ্জিনটি ইলেকট্রিক এবং কিক স্টার্ট উভয় প্রকার স্টার্টিং সিস্টেমে সজ্জিত, ফলে যেকোনো পরিস্থিতিতে সহজে চালু করা যায়। Royal Plus V2-এর ফুয়েল ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ১০ লিটার, যা দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বাইকটি গড়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ দিতে সক্ষম, যা বাইকটিকে সাশ্রয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শহরের ভিড় এবং ট্রাফিকেও এটি ভালো মাইলেজ প্রদান করতে সক্ষম। এর ওজন ১১৪ কেজি, যা খুবই হালকা এবং সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। বাইকটি কম উচ্চতার হওয়ায় এটি ছোট আকৃতির রাইডারদের জন্যও বেশ সুবিধাজনক। বাইকটিতে সামনে ডিস্ক এবং পেছন দিকে ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে, যা সাধারণত শহরের রাস্তায় নিরাপদ ব্রেকিং নিশ্চিত করে। সামনের সাসপেনশন হিসেবে টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পেছনের সাসপেনশন হিসেবে টুইন শক ব্যবহার করা হয়েছে, যা বাইকটির ঝাঁকুনি কমিয়ে মসৃণ যাত্রা নিশ্চিত করে। যারা কম বাজেটে একটি নির্ভরযোগ্য বাইক খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ পছন্দ।
Runner Skooty 110
Runner Skooty 110 বাংলাদেশের মোটরবাইক বাজারে রানার বাইকের এক অনন্য সংযোজন, যা তার ব্যালেন্সড পারফরম্যান্স, স্টাইলিশ ডিজাইন, এবং ব্যবহারিকতার জন্য স্কুটার প্রেমীদের মাঝে বিশেষ প্রশংসিত। বাংলাদেশে রানার বাইকের মডেলের এই ১১০ বাইকটি সিসির স্কুটারটি শক্তিশালী পারফরম্যান্স এবং আধুনিক ফিচারগুলোর এক অনন্য সমন্বয় নিয়ে গঠিত। Runner Skooty 110 ৭৫০০ আরপিএম এ ৬.৯০ বিএইচপি সর্বোচ্চ শক্তি এবং ৬৫০০ আরপিএম এ ৭ এনএম টর্ক এর সমন্বয়ে রাইডারদের দ্রুত গতি এবং নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে। এর ফলে শহর কিংবা গ্রামে বিভিন্ন পথ এবং পরিস্থিতিতে রাইডারের জন্য নিরাপদ এবং মসৃণ রাইডিং নিশ্চিত হয়। এই মডেলে ড্রাম ব্রেক এবং সিংগেল ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম রয়েছে, যা রাইডারদের বৃষ্টির মৌসুমে বা পিচ্ছিল রাস্তায় বাইক চালানোর সময় অতিরিক্ত নিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে। সাথে রয়েছে লিটারে ৪৫ কিলোমিটারের মাইলেজ যা একে কমিউটার বাইক হিসেবে আদর্শ করে তুলে। এর স্টাইলিশ ডিজাইন এবং আধুনিক ফিচারগুলো এটিকে তরুণ এবং ফুয়েল সাশ্রয়ী বাইকারদের মাঝে বিশেষ জনপ্রিয় করে তুলেছে।
Runner Kite Plus
Runner Kite Plus বাংলাদেশের মোটরবাইক বাজারে তার সাশ্রয়ী মূল্য, হাই মাইলেজ, এবং নির্ভরযোগ্য পারফরম্যান্সের জন্য বিখ্যাত। এই ১১০ সিসি ইঞ্জিন সম্পন্ন স্কুটারটি ৭৫০০ আরপিএম ৬.৪৩ বিএইচপি সর্বোচ্চ শক্তি এবং ৫৫০০ আরপিএম এ ৭ এনএম সর্বোচ্চ টর্ক প্রদান করে, যা একে বিভিন্ন পথ এবং পরিস্থিতিতে দ্রুত এবং স্থিতিশীল রাখে। ব্যবহারকারীরা প্রায় ৪৫ কিমি মাইলেজ পান, যা এটিকে দীর্ঘ যাত্রা এবং দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য একটি সাশ্রয়ী পছন্দ করে তোলে। বাইকটির ড্রাম ব্রেকিং সিস্টেম, ইলেকট্রিক ও কিক স্টার্টিং পদ্ধতি এবং এয়ার কুলড ইঞ্জিন রয়েছে, যা এটিকে ব্যবহারিক এবং নির্ভরযোগ্য করে তোলে। এর সর্বোচ্চ গতি প্রায় ঘন্টা প্রতি ৮০ কিলোমিটার।
Runner Bullet 100 V2
Runner Bullet 100 V2 রানার বাইকের এক বিশেষ সংযোজন হিসেবে পরিচিত। এই ১০০ সিসি ইঞ্জিনের মোটরবাইকটি ৭৫০০ আরপিএম এ ৬.৩০ বিএইচপি সর্বোচ্চ শক্তি এবং ৫৫০০ আরপিএম এ ৭.০০ এনএম সর্বোচ্চ টর্ক উৎপাদন করে, যা একে দ্রুত গতি এবং নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ দেয়। প্রায় ৪৫ কিলোমিটার প্রতি মাইলেজ সহ, এটি বাংলাদেশের সড়কে দীর্ঘ যাত্রার জন্য একটি আদর্শ সঙ্গী। সিংগেল ডিস্ক এবং ড্রাম ব্রেকের সমন্বয়ে, Runner Bullet 100 V2 নিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রণ দুটোই নিশ্চিত করে। এই মডেলের সিটের উচ্চতা ৭৯০ মিমি এবং ওজন প্রায় ১২০ কেজি, যা বিভিন্ন উচ্চতার চালকদের জন্য আরামদায়ক এবং সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। ঘন্টা প্রতি ৮০ কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতির Runner Bullet 100 V2 বাংলাদেশের সড়কে দ্রুত এবং আরামদায়ক যাত্রার নিশ্চয়তা দেয়।
উল্লেখিত পাঁচটি বাইক বাংলাদেশে বাজেট রানার বাইক ২০২৪ সালে এর মধ্যে সেরা কিছু বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়। এগুলো প্রতিটি মডেলই নির্ভরযোগ্য ইঞ্জিন পারফরম্যান্স, উচ্চ মাইলেজ, আরামদায়ক সাসপেনশন, এবং সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়। শহরের ব্যস্ত ট্রাফিক কিংবা দীর্ঘ দূরত্বের যাত্রায়, এই বাইকগুলো প্রতিদিনের যাতায়াতের জন্য আদর্শ।


































