মোটরসাইকেল সার্ভিসিংঃ যা যা জানা প্রয়োজনীয়
বর্তমানে পরিবাহনের বহুল ব্যবহৃত যানবাহন হচ্ছে মোটরসাইকেল। এর মাধ্যমে খুব সহজেই কম সময়ে যেকোনো জায়গায় যাতায়াত করা যাচ্ছে, সাথে পৌঁছে দেওয়াও যাচ্ছে বিভিন্ন পণ্য। এরকম সকল সুবিধার জন্য বর্তমানে পরিবহন যানবাহনে মোটরসাইকেল এর স্থান প্রথম সারিতে।
এছাড়া বর্তমানে কমবেশি সকল তরুণেরই স্বপ্ন নিজের একটি মোটরসাইকেল কেনা। তবে মোটরসাইকেল কেনার চাইতে এর সার্ভিসিং করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, সার্ভিসিং এর উপর মোটরসাইকেল এর অনেক কিছুই নির্ভর করে। তাই জানতে হবে, মোটরসাইকেল সার্ভিসিং এর সকল প্রয়োজনীয় তথ্য।
মোটরসাইকেল সার্ভিসিং কেনো প্রয়োজন?
যেকোনো জিনিস বেশি ব্যবহার করলে তার সার্ভিসিং এর প্রয়োজন হয়। আর তা যদি হয় মেশিন বা ইঞ্জিন চালিত কিছু, তাহলে তো সার্ভিসিং এর প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি।
মোটরসাইকেল সার্ভিসিং এর প্রয়োজনীয়তা
অর্থাৎ, মোটরসাইকেলের সকল সুবিধা ও সেইফ রাইডের জন্য মোটরসাইকেল সার্ভিসিং অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। যার জন্য নিয়মিত মোটরসাইকেল সার্ভিসিং করানো প্রয়োজন।
তাছাড়া, মোটরসাইকেল সার্ভিসিং এর প্রয়োজনীয়তা ব্যতীত এর কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে, যা জানা অতিব জরুরি। যা নিয়ে আমরা এখন আলোচনা করবো।
মোটরসাইকেল সার্ভিসিং এর ২১টি প্রয়োজনীয় তথ্য
১: মোটরসাইকেল ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করুন। ভালোভাবে কম্প্রেসার বাতাস দিয়ে শুকিয়ে ফেলুন।
২: স্পার্ক প্লাগ পরিষ্কার করুন, গ্যাপ (০.৮ - ০.৯ এমএম) ঠিক করুন।
৩: ভাল্ভ / টেপেট ক্লিয়ারেন্স ঠিক করুন। (পারফেক্ট চাইলে ফিলার গজ ব্যবহার করুন।)
৪: আইডল আরপিএম ১২০০-১৫০০ এর মধ্যে রাখুন।
৫: ফুয়েল লাইনে লিক আছে কিনা দেখুন।
৬: এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করুন।
৭: ইঞ্জিন অয়েল ও অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করুন।
৮: সামনের এবং পিছনের ব্রেক চেক করুন।
৯: ক্লাচ লিভার ফ্রি প্লে চেক করুন। (১০-১৫ এমএম)
১০: চাকা চেক করুন, কাচ বা পেরেক থাকলে সরান। মেয়াদ শেষ হলে পরিবর্তন করুন।
১১: উভয় চাকার বিয়ারিং চেক করুন।
১২: হ্যান্ডেলবার মসৃণভাবে ঘোরে কিনা দেখুন।
১৩: সামনের ফর্ক ও পিছনের শক চেক করুন।
১৪: ড্রাইভ চেইন ঠিক করুন এবং লুব্রিকেট করুন।
১৫: সব নাট-বল্ট টাইট করুন।
১৬: সব লাইট ও সুইচ পরীক্ষা করুন।
১৭: চাকার হাওয়ার প্রেসার চেক করুন।
১৮: ধোঁয়ায় CO₂ মাপুন। (আধুনিক সার্ভিসিং সেন্টারে সম্ভব)
১৯: মেটাল টু মেটাল অংশে লুব্রিকেন্ট দিন।
২০: ব্রেক সুইচ চেক করুন।
২১: ক্লাচ, থ্রটল ও ব্রেক কেবল লুব্রিকেট করুন।
Motorcycle Maintenance এর উল্লেখযোগ্য তথ্য
- সার্ভিসিং এর পর ফ্রন্ট ডিস্ক রটার ধুয়ে নিন।
- সব ধাপ শেষে টেস্ট ড্রাইভ দিন।
- বাইক চালানোর আগে সাইড স্ট্যান্ড তুলেছেন কিনা দেখুন।
- কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা নিশ্চিত করুন।
Motorcycle Maintenance এর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক
মোটরসাইকেল সার্ভিসিং যে কারণে ভালো:
- কর্মক্ষমতা বাড়ে
- পার্টস এর আয়ু দীর্ঘ হয়
- দীর্ঘমেয়াদে খরচ কমে
- নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়
- বাইক সবসময় রাইডের জন্য প্রস্তুত থাকে
Motorcycle Maintenance এর সুবিধা
ফ্রি সার্ভিসিং করানো যায় (শর্ত সাপেক্ষে) |
অথরাইজড সার্ভিসিং পাওয়া যায় |
পার্টস সহজে পাওয়া যায় |
নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণে খরচ কমে |
অভ্যন্তরীণ সমস্যা আগেই ধরা যায় |
Motorcycle Maintenance কত ঘন ঘন করা উচিত?
এটি নির্ভর করে বাইকের ধরন, ব্যবহারের ফ্রিকোয়েন্সি ও আপগ্রেডের উপর।
আপনার ব্যবহারের উপর নির্ভর করে মাসে একবার, সপ্তাহে একবার বা প্রতিটি যাত্রার আগে চেক করতে পারেন।
আপনি আপনার Motorcycle Maintenance না করলে কি হবে?
- পুরানো তেল ইঞ্জিন ক্ষতি করতে পারে।
- ঢিলা বা টাইট চেইন ভেঙে বিপদ ঘটাতে পারে।
- ভুল টায়ার প্রেসার রিম নষ্ট করতে পারে।
- সার্ভিস রেকর্ড না থাকলে রিসেল ভ্যালু কমে।
- বেশি ব্রেকডাউন হবে।
- ওয়ারেন্টি দাবি নাও পেতে পারেন।
পরিশেষে
অন্য যেকোনো মেশিনের মতো বাইকের স্বাস্থ্য ও সঠিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সার্ভিসিং জরুরি। নিয়মিত সার্ভিসিং আপনাকে খরচ ও মেরামতের ঝামেলা থেকে বাঁচাবে। সার্ভিসিং আপনার বাইকের গ্যারান্টি দেয় এবং সঠিকভাবে কাজ করছে তা নিশ্চিত করে।
তাই বলা হয়, Well service bikes are happy bikes.
FAQs
কেন আপনার মোটরসাইকেল সার্ভিস করা উচিত?
এটি মোটরসাইকেলের আয়ু বাড়াবে এবং পারফরম্যান্স ঠিক রাখবে।
মোটরসাইকেল সার্ভিসিং এ কি কি অপশন থাকে?
সাময়িক, বার্ষিক, মেজর এবং সম্পূর্ণ সার্ভিসিং থেকে বেছে নিতে পারবেন।
Motorcycle Maintenance এর খরচ কেমন?
সাধারণ সার্ভিসিং ~১৫,০০০ টাকা, বড় সার্ভিসিং ~৫০,000 টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
Motorcycle Maintenance কি বিশেষজ্ঞ দ্বারা করা উচিত?
হ্যাঁ, নিরাপত্তার জন্য অন্তত ছয় মাসে একবার বিশেষজ্ঞ দ্বারা সার্ভিসিং করানো উচিত।
নিয়মিত মোটরসাইকেল সার্ভিসিং এ কি খরচ কমে?
হ্যাঁ, নিয়মিত সার্ভিসিং রিসেল ভ্যালু বাড়ায় এবং বড় খরচ কমায়।