বাংলাদেশের সেরা ৫টি হিরো স্পোর্টস বাইক সম্পর্কে আলোচনা

হিরো স্পোর্টস বাইক-গুলো ভারতের বৃহত্তম বাইক নির্মাতা Hero Motocorp-এর একটি অন্যতম আকর্ষণীয় সেগমেন্ট। হিরো সাধারণত এর ফুয়েল ক্যাপাসিটি ও ইউজার-ফ্রেন্ডলী বাইকের জন্য পরিচিত হলেও, স্পোর্টস বাইকের জগতে এর প্রবেশ আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী বলা চলে। তারা স্পোর্টস বাইক ক্যাটাগরিতে এমন কিছু বাইক নিয়ে এসেছে, যা পারফরম্যান্স ও স্টাইলের দিক থেকে অনেক বাইক-প্রেমীর মন কেড়েছে।
বাংলাদেশের সেরা ৫টি হিরো স্পোর্টস বাইক
হিরো স্পোর্টস বাইক-এর দাম তুলনামূলক কম, অন্যতম সুবিধা হলো জ্বালানি সাশ্রয়ী। এছাড়াও বাইকটিতে আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে। হিরো বাংলাদেশে জনপ্রিয় কিছু বাইক উপহার দিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম স্পোর্টস বাইক-গুলো, যা তরুণদের কাছে স্বপ্নের মতো। আশা করি, BikesGuide-এর আজকের ব্লগ পড়ে জেনে নিতে পারবেন বাংলাদেশের সেরা ৫টি হিরো স্পোর্টস বাইক-গুলোর বিস্তারিত বর্ণনা।
Hero Thriller 160R Refresh
যেমন মাসকুলার লুক, তেমন থাকছে বেশ আকর্ষনীয় কিছু ফিচার - বাইকটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাইক। বাইকটি এর ডিজাইন এবং পারফরম্যান্স দিয়ে দেশের বাইকপ্রেমীদের হৃদয়ে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে।
এই বাইকে ১৬৩ সিসির সিঙ্গেল সিলিন্ডার ৪-স্ট্রোক, এয়ার কুলড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা ৮৫০০ আরপিএম-এ ১৫ বিএইচপি পাওয়ার ও ৬৫০০ আরপিএম-এ ১৪ ন্যানোমিটার টর্ক জেনারেট করতে পারে। এর সামনে ও পেছনে হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকের সামনের চাকায় সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস ব্রেকিং রয়েছে। বাইকের সামনে একটি হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক ফর্ক ব্যবহার করা হয়েছে এবং পেছনে রয়েছে ৭-স্টেপ অ্যাডযাস্টেবল মনো-শক এবসর্বার। বাইকের উভয় টায়ারই টিউবলেস, সামনের টায়ারের সাইজ হচ্ছে ১০০/১৮-১৭ এবং পেছনের টায়ারের সাইজ হচ্ছে ১৩০/৭০-১৭।
Hero Thriller 160R
হিরো থ্রিলার ১৬০আর এর বিশেষত্ব হলো এর বডি ডিজাইন, বাইকটির ফ্রন্ট লুক এতোটাই আকর্ষণীয় যে অনেক তরুনদের কাছে সেরা ৫টি হিরো স্পোর্টস বাইক হিসেবে এটি-ই পছন্দের শীর্ষে থাকে।
এই স্পোর্টস থ্রিলারটি একটি সিঙ্গেল-সিলিন্ডার, ফোর-স্ট্রোক, এয়ার-কুলড, ২ ভালভ, OHC ১৬৩ সিসি FI ইঞ্জিন দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে, যা ৮৫০০ আরপিএম-এ ১৫ বিএইচপি ম্যাক্স পাওয়ার এবং ৬৫০০ আরপিএম-এ ১৪ এনএম টর্ক উৎপন্ন করতে পারে৷ ডুয়াল-ডিস্ক ভার্শনে সামনে একটি ২৭৬ মিমি পেটাল ডিস্ক এবং পিছনের চাকায় ২২০ মিমি ডিস্ক ব্রেক রয়েছে। অপরদিকে সিঙ্গেল-ডিস্ক ভার্শনে সামনের দিকে ২৭৬ মিমি পেটাল ডিস্ক ও পিছনের চাকায় ১৩০ মিমি ড্রাম ব্রেক রয়েছে। সামনে স্থাপন করা হয়েছে ঘর্ষন রোধী বুশ (anti friction bush) সঙ্গে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন ও পিছনে ৭ স্টেপ অ্যাডজাস্টেবল রিয়ার মনো-শক সাসপেনশন অ্যাড করা হয়েছে। ভাংগা রাস্তায় বাইকটির পেছনের সাসপেনশন দারুন সাপোর্ট দেয়।
Hero Karizma XMR 210
সেরা ৫টি হিরো স্পোর্টস বাইক-এর মধ্যে Hero Karizma XMR 210 একটি ফ্ল্যাগশিপ স্পোর্টস বাইক যা Hero Motocorp এর করিজমা সিরিজের সর্বশেষ আপডেট।
বাইকটিতে ২১০ সিসি, লিকুইড কুলড, ফুয়েল ইনজেক্টেড ইঞ্জিন রয়েছে যা ৯২৫০ আরপিএম এ ২৫.৫ বিএইচপি সর্বোচ্চ শক্তি এবং ৭২৫০ আরপিএম এ ২০.৪ এনএম সর্বোচ্চ টর্ক উৎপন্ন করতে পারে। এটির সামনে এবং পিছনে ডিস্ক ব্রেক যুক্ত করা হয়েছে, সাথে থাকছে এবিএস প্রযুক্তি। সামনে টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন যুক্ত করা হয়েছে এবং পিছনে রয়েছে প্রি-লোড অ্যাডজাস্টেবল মনো-শক সাসপেনশন। বাইকটির মাইলেজ প্রায় ৩৫-৪০ কিমি/লিটার, যা ২১০ সিসি বাইকের জন্য বেশ ভালো।
Hero Hunk Single Disc
বাইকটি মূলত ইয়াং জেনারেশনকে টার্গেট করে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। কিন্তু লং-লাস্টিং পারফরম্যান্স এবং সার্ভিসের কারণে এটি সকল বয়সী মানুষের আস্থা অর্জন করে নিয়েছে।
বাইকটি একটি শক্তিশালী ৪ স্ট্রোক এয়ার কুলড ১৪৯.২ সিসির বাইক যার সর্বোচ্চ ক্ষমতা ১৪.৩ পিএস @ ৮৫০০ আরপিএম পাওয়ার এবং ১২.৬ এনএম @ ৬৫০০ আরপিএম পর্যন্ত টর্ক। বাইকটির সামনের টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার সাসপেনশন এবং পিছনে সুইং আর্ম ৭-স্টেপ এডজাস্টেবল মনো-শক সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। এই সাসপেনশন বেশ ভালো লোড নিতে পারে, যথেষ্ট ভালো কমফোর্ট দিতে পারে। বাইকটির সামনের চাকায় ২৪০ মিমি ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনের চাকায় ১৩০ মিমি ড্রাম ব্রেক (ইন্টারনাল এক্সপান্ডিং-শু টাইপ ব্রেক) ব্যবহার করা হয়েছে।
Hero Hunk Double Disc
Hero Hunk Double Disc Matte Black মাস্কুলার শেপের স্পোর্টসি লুকিং স্ট্যান্ডার্ড কমিউটার বাইক। আমাদের দেশে সেরা ৫টি হিরো স্পোর্টস বাইক-এর মধ্যে এটি একটি খুব স্ট্যান্ডার্ড মানের কমিউটার-স্পোর্টস বাইক হিসেবে সুপরিচিত।
এ বাইকটিতে ১৪৯.২ সিসি ইঞ্জিন ব্যাবহার করেছে, যেটি এয়ার-কুলড, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪-স্ট্রোক। বাইকটি সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। এটির সর্বোচ্চ শক্তি ১৪.২ পিএস @ ৮৫০০ আরপিএম এবং সর্বোচ্চ ঘূর্ণন বল ১২.৮ এনএম @ ৬৫০০ আরপিএম। প্রতি লিটার জ্বালানিতে এটি গড়ে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সক্ষম। বাইকটির সামনে ও পিছনে ডিস্ক ব্রেক সহ, সামনে টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার সাসপেনশন এবং পিছনে সুইং আর্ম নিট্রক্স জিআরএস সাসপেনশন দেওয়া আছে।
পরিশেষে
হিরো স্পোর্টস বাইকগুলো স্টাইল, পারফরম্যান্স ও আধুনিক টেকনোলজির সমন্বয়ে তৈরি। যাদের একটি ব্যাল্যান্সড স্পোর্টস বাইক প্রয়োজন, তারা অবশ্যই হিরোর স্পোর্টস বাইকগুলোকে পছন্দের ও বিবেচনার তালিকায় রাখতে পারেন। আমরা চেষ্টা করেছি বাংলাদেশের সেরা ৫টি হিরো স্পোর্টস বাইক-গুলোর বেসিক ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন তুলে ধরার। জানার জন্য রিভিউ-এর লিংক দেওয়া হয়েছে, আশা করি এতে আপনারা খুব সহজেই বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন। হিরো ব্র্যান্ডের এমন বিভিন্ন রেঞ্জের মোটরসাইকেল সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন - ২- ৪ লক্ষ টাকার মাঝে ৫ টি হিরো মোটরবাইক সম্পর্কে আলোচনা। এছাড়াও মার্কেটে অন্যান্য বাইকের দাম জানতে ব্রাউজ করুন Bikroy এ।







































