বাংলাদেশের ৫টি সেরা TVS কমিউটার বাইক
7 মিনিটে পড়া যাবে
7 মিনিটে পড়া যাবে

TVS একটি বিখ্যাত ভারতীয় মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী কোম্পানি। লং-লাস্টিং পারফরম্যান্স, ডিসেন্ট ডিজাইন, সার্ভিসিং কোয়ালিটির কারণে, টিভিএস অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। এই ব্র্যান্ড বেশ ভালো মানের এবং কাস্টমার স্যাটিসফ্যাকশনের কথা চিন্তা করে বাইক তৈরি করে। বাজাজের পরে TVS ব্র্যান্ডের কমিউটার বাইক বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই ব্লগে বাংলাদেশের কয়েকটি সেরা TVS কমিউটার বাইক নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।মূলত দুর্দান্ত পারফর্মিং কমিউটার টাইপ বাইকের জন্য টিভিএস মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড বিখ্যাত হয়েছে। এই ব্র্যান্ডের কমিউটার বাইকগুলো মূলত মধ্যম আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে তৈরী করা হয়। এই বাইকগুলোর দুর্দান্ত বিল্ড কোয়ালিটি এবং লং লাস্টিং পারফরম্যান্স, এগুলোকে গ্রাহক জনপ্রিয়তার শীর্ষ তালিকায় রেখেছে।
৫টি সেরা TVS কমিউটার বাইক
TVS METRO 100
TVS Metro একটি দুর্দান্ত মানের এন্ট্রি লেভেলের কমিউটার বাইক। এই বাইকটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল ভালো মাইলেজ, স্থায়িত্ব এবং তুলনামূলক কম দাম। বাংলাদেশে এই বাইকটির দুইটি ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে একটি হল ‘টিভিএস মেট্রো ইএস’ এবং অন্যটি ‘টিভিএস মেট্রো কেএস’। ইএস অর্থ ইলেকট্রিক স্টার্টিং এবং কেএস অর্থ হল কিক স্টার্টিং মেথড। এটিতে এ/সি ডিজিটাল সিডিআই ইগনিশন প্রযুক্তি, ফোর স্পিড গিয়ারবক্স, অ্যানালগ স্পিডোমিটার, পিলিয়ন ফুটরেস্ট, পিলিয়ন গ্র্যাব রেল, ফুয়েল গেজ সহ আরো অনেক ফিচার রয়েছে। রিজনেবল দাম এবং ভালো মাইলেজের কারণে বাইকটি খুবই জনপ্রিয়।ফিচার
- ইঞ্জিন: সিঙ্গেল ওভারহেড ক্যাম শ্যাফট, এয়ার কুলড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার এবং স্পার্ক-ইগনিশন
- ব্রেকিং সিস্টেম: ড্রাম ব্রেক
- সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক ফর্ক এবং ৫-স্টেপ সুইংআর্ম অ্যাডজাস্টেবল হাইড্রোলিক শক
- লাইটিং সিস্টেম: হ্যালোজেন
- মাইলেজ: ৫০ কিমি/লিটার (প্রায়)
- স্পিড: ৮৫ কিমি/আওয়ার (প্রায়)
- স্টার্টিং মেথড: কিক এবং ইলেকট্রিক (আলাদা ভ্যারিয়েন্ট)
সুবিধা
- খুব ভালো মাইলেজ দিয়ে থাকে
- লং লাস্টিং ইঞ্জিন পারফরম্যান্স
- বাজেট বান্ধব দামে একটি দুর্দান্ত কমিউটার বাইক
অসুবিধা
- ড্রাম ব্রেক
- টায়ার গুলো পাতলা
- থ্রটল ছেড়ে দিলে হেডলাইটের আলো কমে যায়।
TVS Metro Plus 110
কমিউটার সেগমেন্টের এই বাইকটিতে উন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিন ব্যবহার করে হয়েছে। বাইকটির রেডি- পিকাপ এবং অ্যাক্সিলারেশন খুব ভালো। বাইকটির ডিজাইনও বেশ চমৎকার। বাইকটিতে দেওয়া হয়েছে কন্সট্যান্ট মেশ বিশিষ্ট ৪ স্পিড গিয়ারবক্স এবং সবকিছুই খুব ভালোভাবে প্রোপার রেশিও অনুযায়ী সেট করা হয়েছে। এই বাইকটিতে টিউবলেস টায়ার এবং অ্যালয় হুইল ব্যবহার করা হয়েছে। ব্রেকের উপর ভিত্তি করে এই বাইকটির ২ টি ভ্যারিয়েন্ট আছে। একটি ভ্যারিয়েন্টে সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক। অন্য ভ্যারিয়েন্টে উভয় চাকায় ড্রাম ব্রেক দেওয়া হয়েছে।ফিচার
- ইঞ্জিন: ১১০ সিসির এয়ার কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার এবং স্পার্ক-ইগনিশন
- ব্রেকিং সিস্টেম: ডিস্ক এবং ড্রাম ব্রেক (আলাদা ভ্যারিয়েন্ট)
- সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক অয়েল ডাম্পড এবং অ্যাডজাস্টেবল ৫-স্টেপ হাইড্রোলিক শক সুইং আর্ম
- লাইটিং সিস্টেম: হ্যালোজেন
- মাইলেজ: ৫৫ কিমি/লিটার (প্রায়)
- স্পিড: ১০০ কিমি/আওয়ার (প্রায়)
- স্টার্টিং মেথড: কিক এবং ইলেকট্রিক (আলাদা ভ্যারিয়েন্ট)
সুবিধা
- বেশ পাওয়ারফুল ইঞ্জিন
- ভালো মাইলেজ
- অ্যাক্সিলারেশন খুবই ভালো
অসুবিধা
- পেছনের টায়ারটি একটু চিকন
- পেছনের ব্রেক আরও ভালো হতে পারতো
- ভাইব্রেশন ইস্যু আছে
TVS Jive 110
বাইকটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল ভালো মাইলেজ, লং-লাস্টিং পারফরম্যান্স এবং তুলনামূলক কম দাম। বাইকটির স্পেশাল কিছু ফিচারের মধ্যে রয়েছে – এয়ার-কুল্ড ইঞ্জিন, পেপার-ফিল্টার, বিল্ট-ইন সোলেনয়েড ভালভ, সেমি-অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন, সিঙ্গেল ক্রেডল টিউবুলার ফ্রেম ইত্যাদি।টিভিএস এটিকে “টেনশন ফ্রি বাইক” হিসেবে বিজ্ঞাপন দিয়ে বাজারে লঞ্চ করেছিল। কারণ, বাইকটিতে কোনো ক্লাচ লিভার নেই, এখানে সেমি-অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। টিভিএস ব্র্যান্ড, এই বাইকের মধ্যে স্বল্প দামের মধ্যে সেমি-অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন ফিচারটি দিয়ে গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বাংলাদেশের বর্তমান যানজট পরিস্থিতি এবং গণপরিবহন সমস্যার প্রেক্ষিতে সিটি রাইডিং-এ দ্রুত যোগাযোগের জন্য এই বাইকটি অনন্য।ফিচার
- ইঞ্জিন: ১১০ সিসির এয়ার কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, এবং সিঙ্গেল সিলিন্ডার
- ব্রেকিং সিস্টেম: ড্রাম ব্রেক
- সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং হাইড্রোলিক স্প্রিং
- লাইটিং সিস্টেম: হ্যালোজেন
- মাইলেজ: ৫৫ কিমি/লিটার (প্রায়)
- স্পিড: ৯০ কিমি/আওয়ার (প্রায়)
- স্টার্টিং মেথড: কিক এবং ইলেকট্রিক
সুবিধা
- ডিসি-ডিজিটাল ইগনিশন সিস্টেম
- সেমি-অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন সিস্টেম
- ভালো মাইলেজ, ফুয়েল ক্যাপাসিটি এবং বাজেট বান্ধব দাম
অসুবিধা
- ড্রাম টাইপ ব্রেকিং সেটআপ
- টপ স্পিডে এবং দীর্ঘ সময় রাইডিং-এ ইঞ্জিন গরম হয়ে ওঠে
- এসি অপারেটেড হেডলাইট, তাই থ্রটল ছেড়ে দিলে আলো কমে যায়
TVS Max 125
দেশের কমিউটার বাইকের বাজারে সাড়া ফেলে দেয়া অন্যতম বাইক হচ্ছে TVS Max 125। মূলত দ্রুত ডেইলি কমিউটিং এবং স্বল্প দূরত্বের রাইডিং এর জন্য তৈরি করা হয়েছে এই বাইকটি। আর এই কারণে বাইকটিতে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে ফুয়েল ইফিশিয়েন্সি, রাইডিং কমফোর্টনেস এবং নির্ভরযোগ্য হ্যান্ডেলিং। বাইকটির সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হলো এর দুর্দান্ত মাইলেজ। সুবিশাল ফুয়েল ক্যাপাসিটি নিয়ে বাইকটি বেশ দীর্ঘ পথ রাইড করা যাবে। সেই সাথে এর কার্বুরেটেড ফুয়েল সাপ্লাই নিশ্চিত করবে বাইকের স্মুথ পারফরম্যান্স এবং কমফোর্ট রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স।ফিচার
- ইঞ্জিন: ১২৫ সিসির এয়ার কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, ২-ভাল্ভ, সিঙ্গেল সিলিন্ডার এবং স্পার্ক-ইগনিশন
- ব্রেকিং সিস্টেম: ড্রাম ব্রেক
- সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং সিরিয়াল স্প্রিং
- লাইটিং সিস্টেম: হ্যালোজেন
- মাইলেজ: ৫৫ কিমি/লিটার (প্রায়)
- স্পিড: ১০০ কিমি/আওয়ার (প্রায়)
- স্টার্টিং মেথড: কিক এবং ইলেকট্রিক (আলাদা ভ্যারিয়েন্ট)
সুবিধা
- দারুণ সিটিং অ্যাডজাস্টমেন্ট
- শক্তিশালী ইঞ্জিন
- দুর্দান্ত মাইলেজ
অসুবিধা
- টপ স্পিডে হ্যান্ডেলিং কম্ফোর্টেবল নয়
- চিকন টায়ার
- ড্রাম টাইপ ব্রেক
TVS Stryker 125
TVS Stryker 125, কমিউটার ক্যাটাগরিতে অন্যতম সেরা একটি বাইক। ডিসেন্ট ডিজাইন, শক্তিশালী ইঞ্জিন, গতি এবং মাইলেজের সমন্বয়ে এটি দুর্দান্ত একটি বাইক। এটির ডিজাইনে অ্যাপাচি এবং আরটিআর এর সংমিশ্রণে করা হয়েছে। ভালো মাইলেজ এবং দুর্দান্ত গতির সমন্বয়ে এটি অনন্য একটি মোটরসাইকেল। কমিউটার বাইকে এমন সমন্বয় পাওয়া কঠিন। আপনি যদি দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য ভালো মাইলেজ এবং গতিময় কমিউটার বাইক চান, তাহলে বাইকটি আপনার জন্য পারফেক্ট হবে। দৈনন্দিন প্রয়োজনে ঘন-ঘন যাতায়াতের বাহন হিসেবে বাইকটি আপনার খুব কাজে আসবে।ফিচার
- ইঞ্জিন: ১২৫ সিসির এয়ার কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, ২-ভালভ, সিঙ্গেল সিলিন্ডার এবং স্পার্ক-ইগনিশন
- ব্রেking সিস্টেম: সামনে ডিস্ক এবং পিছনে ড্রাম ব্রেক
- সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং হাইড্রোলিক ড্যাম্পার
- লাইটিং সিস্টেম: হ্যালোজেন
- মাইলেজ: ৫০ কিমি/লিটার (প্রায়)
- স্পিড: ১০০ কিমি/আওয়ার (প্রায়)
- স্টার্টিং মেথড - কিক এবং ইলেকট্রিক
সুবিধা
- লং লাস্টিং ইঞ্জিন পারফরম্যান্স
- সাসপেনশন এবং ব্রেকিং সিস্টেম স্ট্যান্ডার্ড মানের
- মাইলেজ এবং গতির দুর্দান্ত সমন্বয়
অসুবিধা
- টপ স্পিডে ভাইব্রেশন হয় তাই কন্ট্রোল করা কঠিন
- টায়ার বেশ পাতলা
- পেছনের চাকাতেও ডিস্ক ব্রেক থাকলে ভালো হতো
TVS Radeon 110
বাংলাদেশের বাজারে এই বাইকটিকে মনে করা হয় কমিউটার সেগমেন্টের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় এবং সুন্দর ডিজাইনের বাইক। ক্রোম ফিনিশিং-এর এই বাইকটি রেগুলার ইউজের জন্য অনেক ভালো একটি বাইক। টিভিএস সর্বপ্রথম এই বাইকে ডিউরা-লাইফ টেকনোলজির ইঞ্জিন ব্যবহার করেছে। এটি বেশ ফুয়েল ইফিশিয়েন্ট। এটিতে ৪-স্পিড গিয়ারবক্স ব্যবহার করা হয়েছে। কমিউটার সেগমেন্টের বাইক হিসেবে এই বাইকটির সাসপেনশনের ফিডব্যাক বেশ ভালো।ফিচার
- ইঞ্জিন: ১১০ সিসির এয়ার কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, ২-ভালভ, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এসওএইচসি এবং স্পার্ক-ইগনিশন
- ব্রেকিং সিস্টেম: ড্রাম ব্রেক
- সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং টুইন শক
- লাইটিং সিস্টেম: হ্যালোজেন
- মাইলেজ: ৫৫ কিমি/লিটার (প্রায়)
- স্পিড: ১০০ কিমি/আওয়ার (প্রায়)
- স্টার্টিং মেথড: কিক এবং ইলেকট্রিক
সুবিধা
- হেভি ইউজের জন্য উপযোগী
- ভালো মাইলেজ
- ইঞ্জিন কিল সুইচ আছে
অসুবিধা
- ড্রাম ব্রেক
- হেডলাইট আরও পাওয়ারফু্ল হলে ভালো হতো
- টায়ার একটু চিকন
TVS PHOENIX 125
ডিসেন্ট ডিজাইন, ইঞ্জিন পারফরম্যান্স, দুর্দান্ত গতি এবং মাইলেজের সমন্বয়ে এটি একটি চমৎকার কমিউটার টাইপ মোটরসাইকেল। নতুন সংস্করণে ডিজিটাল কিছু ফিচার সংযুক্ত করা হয়েছে এবং ফুয়েল ইফিসিয়েন্ট টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটি ৪-স্পিড গিয়ারবক্স নিয়ে গঠিত। এটি কোনো পিলিয়ন ছাড়াই ১০০ কিমি এর বেশি গতি তুলতে পারে। রেগুলার ব্যবহারে এই বাইকের ডিউরাবিলিটি এবং ইঞ্জিন পারফরম্যান্স নিয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। ইলেকট্রিক প্যানেলের রাইডার ইন্টারফেস যথেষ্ট ভালো। এটির ফুয়েল ট্যাংকের ধারণ ক্ষমতা ১২ লিটার, ফুয়েল রিজার্ভ ২ লিটার সহ।ফিচার
- ইঞ্জিন: ১২৫ সিসির এয়ার কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, SOHC, এবং ইকো-থ্রাস্ট ইঞ্জিন
- ব্রেকিং সিস্টেম: ড্রাম ব্রেক
- সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক এবং গ্যাস ফিলড হাইড্রোলিক
- লাইটিং সিস্টেম: হ্যালোজেন
- মাইলেজ: ৬০ কিমি/লিটার (প্রায়)
- স্পিড: ১০০ কিমি/আওয়ার (প্রায়)
- স্টার্টিং মেথড - কিক এবং ইলেকট্রিক
সুবিধা
- বিল্ড কোয়ালিটি অসাধারণ
- ডিসি ডিজিটাল ট্রানজিস্টর কয়েল ইগনিশন (TCI) সিস্টেম
- স্ট্যান্ডার্ড মাইলেজ এবং স্পিড
অসুবিধা
- পেছনের টায়ার হার্ড ব্রেক করলে স্কিড করে
- ড্রাম ব্রেক
- টপ স্পিডে ভাইব্রেশন হয়

































