১ - ২ লক্ষ টাকার মধ্যে হিরো মোটরবাইক সম্পর্কে আলোচনা

বাংলাদেশে কমিউটার বাইকের সেগমেন্টে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম বোধহয় হিরো। এই ব্র্যান্ডের এতোগুলো বাইক বর্তমানে আমাদের বাজারে রয়েছে যে রাইডাররা হিরোর বাইক ক্রয় করতে চাইলে কনফিউজড হয়ে যান এই ভেবে যে কোনটা রেখে কোনটা নিবেন। কারণ, হিরোর প্রতিটি বাইকই দেখতে সুন্দর, দামে সাশ্রয়ী, আবার দীর্ঘদিন ধরে ভালো সার্ভিস দিয়ে যায়। তাই আপনার কনফিউশন দূর করতে আজ ১ - ২ লক্ষ টাকার মধ্যে হিরো মোটরবাইক সম্পর্কে আলোচনা করবো। আশা করি এতে আপনাদের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে।
১। Hero Hunk 150R ABS
আপনার বাজেট যদি ২ লক্ষ টাকার আশেপাশে হয়ে থাকে তাহলে Hero Hunk 150R ABS আপনার যদি একটি ভালো চয়েস হতে পারে। এই বাইকে আছে ১৫০ সিসির, এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি ইঞ্জিন যা ১০.৫৫ কিলোওয়াট পাওয়ার ও ১২.৬ এনএম টর্ক জেনারেট করতে সক্ষম। অর্থাৎ, বাইক থেকে আপনি ৪০ কিলোমিটারের আশেপাশে মাইলেজ পেয়ে যাবেন। বাইকের সিটের উচ্চতা ৭৯০ মিমি, গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬৭ মিমি ও ফুয়েল ক্যাপাসিটি ১২.৪ লিটার। বাইকের সামনে থাকছে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পেছনে থাকছে মনোশক সাসপেনশন। সামনে ও পেছনে ডিস্ক ব্রেকের পাশাপাশি থাকছে সিঙ্গেল-চ্যানেল এবিএস সাপোর্ট।
২। Hero Thriller 160R Fi ABS
আপনার যদি আরো কিছুটা স্পোর্টি লুক প্রয়োজন হয়, তাহলে কনসিডার করতে পারেন Hero Thriller 160R Fi ABS। এই বাইকে থাকছে ১৬০ সিসির এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি ইঞ্জিন যা ১৫ বিএইচপি পাওয়ার ও ১৪ এনএম টর্ক জেনারেট করতে সক্ষম। তাই বাইকটি বেশ পাওয়ারফুল বলা যায়। এটি আপনাকে ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটারের মাইলেজ ও ১২৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টার সর্বোচ্চ গতি এনে দিতে পারবে। বাইকের সামনে থাকছে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পেছনে দেয়া হয়েছে মনোশক সাসপেনশন। আর ব্রেকিং সেগমেন্টে সামনে থাকছে ডিস্ক ব্রেকের সাথে এবিএস সাপোর্ট আর পেছনে থাকছে ড্রাম ব্রেক।
৩। Hero Ignitor Techno
এই বাইকে দেয়া হয়েছে ১২৫ সিসির এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি ইঞ্জিন যা ১১ বিএইচপি পাওয়ার ও ১১ এনএম টর্ক জেনারেট করতে সক্ষম। এই বাইক থেকে আপনি ৫৫ কিলোমিটার প্রতি লিটারের মাইলেজ বেশ সহজেই পেয়ে যাবেন। এছাড়া থাকছে ৪টি গিয়ার, সাথে কিক ও ইলেক্ট্রিক স্টার্ট। Hero Ignitor Techno বাইকের ফুয়েল ক্যাপাসিটি ১১ লিটার ও ওজন প্রায় ১২৮ কেজি। বাইকের সামনে দেয়া হয়েছে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পেছনে দেয়া হয়েছে ৫-স্টেপ অ্যাডযাস্টেবল হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার। ব্রেকিং সেগমেন্টে সামনে ডিস্ক ব্রেক ও পেছনে ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে।
৪। Hero Glamour
এটি হিরো আরো একটি সিম্পল-লুকিং কমিউটার বাইক। বাইকে দেয়া হয়েছে ১২৫ সিসির ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি ইঞ্জিন যা ৯ বিএইচপি পাওয়ার ও ১০ এনএম টর্ক জেনারেট করতে সক্ষম। এই বাইক থেকেও আপনি ৫৫ কিলোমিটার প্রায় মাইলেজ পাবেন। তবে সর্বোচ্চ গতি পাবেন ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। বাইকের ফুয়েল ক্যাপাসিটি ১৩.৬ লিটার ও ওজন প্রায় ১২৫ কেজি। বাইকের সামনে দেয়া হয়েছে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পেছনে দেয়া হয়েছে সুইং-আর্ম সাসপেনশন। এছাড়া ব্রেকিং সেগমেন্টে সামনে ডিস্ক ব্রেক ও পেছনে ড্রাম ব্রেক দেয়া হয়েছে।
৫। Hero Splendor iSmart Plus
একদম এন্ট্রি-লেভেল বাজেটে স্টাইলিশ বাইক চাইলে এটি কনসিডার করতে পারেন। এই বাইকে দেয়া হয়েছে ১১০ সিসির এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি ইঞ্জিন যা ৯ বিএইচপি পাওয়ার ও ৯ এনএম টর্ক জেনারেট করতে সক্ষম। বাইক থেকে ৫০ কিলোমিটারের মাইলেজ ও ৭৫ কিলোমিটারের টপ স্পিড পেয়ে যাবেন। এছাড়া সামনে থাকছে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পেছনে দেয়া হয়েছে সুইং-আর্ম সাসপেনশন। তবে ব্রেking সেগমেন্টে দেয়া হয়েছে শুধু ড্রাম ব্রেকের সেটআপ। থাকছে না কোনো ধরণের সিবিএস বা এবিএস সাপোর্ট।
পরিসংহার
১ - ২ লক্ষ টাকার মধ্যে হিরোর সেরা কমিউটার মোটরবাইকগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। আশা করি এখন আপনাদের সিদ্ধান্ত নেয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে। প্রত্যেকটি বাইক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলে লেখাটি অনেক বড় হয়ে যাবে বলে তা করা গেলো না। তবে কোনো বাইক ভালো লাগলে আগেই তার বিস্তারিত রিভিউ দেখে নেয়া অনুরোধ রইলো।

































