Yamaha R15 এর প্রথম রাইড এর অনুভূতি কেমন ?

ফোরথ জেনারেশনে এসে R15 কিভাবে আরও এগিয়ে যাচ্ছে?
Yamaha R15 এর আইকনিক স্ট্যাটাস এর পেছনে কিছু বিষয় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। পারফর্মেন্স, স্টাইলিং কিংবা হ্যান্ডলিং সবক্ষেত্রেই এর আবেদন চমৎকার। Yamaha R15 বালকের ভেতরে পৌরুষ এবং পুরুষের ভেতর বালকের স্বভাব জাগিয়ে তোলে। প্রতিটি তরুণের কাছে R15 এর আবেদন অন্যরকম। ২০২১ এ বাজারে আসা R15 আরও উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য অত্যাধুনিক বাইকগুলোর মত দুর্দান্ত লুক নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে। যদিও এর দাম তুলনামূলক একটু বেশি তারপরও পারফর্মেন্স, স্টাইলিং কিংবা নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতার দিক দিয়ে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের রেসিং বাইকগুলোর দামের সাথে তুলনা করলে এই দাম অনেক কম বলেই মনে হবে।
চলুন, আজ ভারতের অভিজ্ঞ বাইক রিভিউয়ার Kartikeya Singheeর লেখা থেকে এই বাইকটি সম্পর্কে Expert Opinion জেনে নিই। কিছু প্রশ্নোত্তর এর মাধ্যমে আমাদের এই Expert Opinion টি সাজানো হয়েছে।
প্রশ্ন ১: V3 এর চাইতে V4 এর দাম বেশি হওয়া কি যুক্তিসংগত?
R15 V3 এর চাইতে Base V4 এর দাম স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি। বাংলাদেশে R15 V3 কিনতে গেলে দাম পড়বে ৫,০০,০০০ টাকা অন্যদিকে V4 ৫,৫০,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। কারণ, R15 V3 এর চাইতে R15 V4 এ আরও বাড়তি সুবিধা থাকছে যেমন KYB থেকে Upside-down forks, ট্র্যাকশন কন্ট্রোল, ফিচারে পরিপূর্ণ ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারের সাথে ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি এবং একটি উজ্জ্বল LED হেডলাইট। আরও একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল এতে উন্নতমানের প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার এর ফিট এবং ফিনিশকে করেছে আরও দুর্দান্ত। R15 V3 কে যদিও একটু ছোটোখাটো মনে হয় কিন্তু V4 এর অনুভূতি সম্পূর্ণ অন্যরকম। Span Adjustment এর ক্ষেত্রে এই বাইকটি একদম নিরেট।
Yamaha R15 V4 এর মূল্য
মডেল | Yamaha R15 V4 |
বেইস | ৫,৪০,০০০ টাকা |
রেসিং ব্লু | ৫,৪৫,০০০ টাকা |
R15 M | ৫,৫৫,০০০ টাকা |
R15 M Moto GP Edition | ৫,৬৫,০০০ টাকা |
প্রশ্ন ২: আপনার কি R15 M Variant টি নেয়া উচিত?
R15 এর Variant গুলোর মধ্যে দামের পার্থক্য ২০,০০০-৫০,০০০ টাকার মধ্যে। মোটামুটি মধ্যম রেঞ্জের মধ্যে রেসিং ব্লু Variant টি পাওয়া যাবে। এতে M Variant এর মত কুইকশিফটার আছে। কিন্তু আমার পরামর্শ হল M Variant টি নেয়া উচিত কারণ এতে নতুন রং ও গ্রাফিক্সের সাথে সাথে R7 অনুপ্রাণিত ডিজাইনেরও আবেশ পাবেন। অতিরিক্ত পয়সা খরচ হলেও এতে আপনি পাবেন গোল্ড পেইন্টেড ক্যালিপার্স, স্পেশাল ব্যাজ এবং ব্লু ফর্ক ক্যাপ্স যা আপনার বাইক রাইডের অনুভূতিকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে। এছাড়াও M Variant এর সিটে আছে স্পেশাল ফেব্রিক এবং সুইং আর্ম ও Exhaust-এ পাচ্ছেন ধুসর রঙের আভা।
প্রশ্ন ৩: ট্যুরের জন্য কেমন?
৫,৫০,০০০ টাকার মধ্যে R15 ই একমাত্র বাইক যেটা অধিকাংশ ক্রেতা তার ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখতে চাইবেন। এটা নিয়ে ট্যুরে যেতে অসুবিধা হবে না। হেডল্যাম্পের উল্লেখযোগ্য উন্নতি চোখে পড়ার মত। New Class D LED হেডল্যাম্পের আলো অনেক উজ্জ্বল এবং অনেক দূর পর্যন্ত যায়। দ্বিতীয়ত এর Aero Dynamical Design এমনভাবে তৈরি যে তা দ্রুত বাতাস কেটে চলে যেতে পারে কারণ এর Drag ০.৩০৭ থেকে ০.২৯৩ এ নামানো হয়েছে। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে R15 V4 সহজেই তিন ডিজিটের গতি তুলতে পারে। এর বসার সিটও যথেষ্ট আরামদায়ক।
ডাইমেনশন
দৈর্ঘ্য | ১৯৯০ মিমি |
প্রস্থ | ৭২৫ মিমি |
হুইল বেইস | ১৩২৫ মিমি |
সিটের উচ্চতা | ৮১৫ মিমি |
প্রশ্ন ৪: এটা কি আরও আরামদায়ক?
যদিও সিটের উচ্চতা, হুইল বেইস, ডাইমেনশন V3 এর মতই তারপরও V4 এর লুক একটু ভিন্ন। পিলিওনের কমফোর্ট লেভেল আগের মতোই আছে। ক্লিপ অন বার এর পজিশন একটু উঁচু করা হয়েছে এবং কোনাকুনি করে ফ্ল্যাট করার চেষ্টা করা হয়েছে যাতে করে চালানোর সময় আরামে বসা যায়। এতে নিত্যদিনের চলাচল কিংবা দীর্ঘ যাত্রায় আরামদায়ক অভিজ্ঞতা পাবেন।
প্রশ্ন ৫: এটা কি আরও দুর্দান্ত?
V4 নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। বাইকটি হালকা, সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং যেকোনো রাস্তায় চালানো যায়। নতুন KYB Fork দিয়ে কঠিন বাঁক নেওয়ার সময়ও গতি ধরে রেখে নিরাপদে ব্রেক করা যায়। তবে সামনের টায়ার Radial এ আপগ্রেড না হওয়ায় উচ্চ গতিতে ব্রেকিংয়ে Radial Calipers এর অভাব টের পাওয়া যায়। টেস্ট রাইডে ১০০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে ব্রেক করলে এটি ৫৪ মিটার দূরে থামে, যা KTM RC 125 থেকে ভালো। ABS সিস্টেমও যথেষ্ট স্মুথ।
প্রশ্ন ৬: 18PS এর মোটরসাইকেলে কি Traction Control এর প্রয়োজন আছে?
আসলে প্রয়োজন নেই, তবে Traction Control সিস্টেম থাকা একটি বাড়তি নিরাপত্তা। বাঁক নেওয়া বা ড্রিফটের সময় এটি চাকায় পাওয়ার কন্ট্রোল করে দেয়। অতিরিক্ত টাকা খরচ ছাড়াই এটি একটি ওয়েলকাম ফিচার।
প্রশ্ন ৭: Quick Shifter কি ভালো?
Quick Shifter Supplemented Upshift চালু হলে Instrument Cluster এ QS সাইন দেখা যায়। ২০ কিমি/ঘণ্টা গতি এবং ২০০০ rpm এ QS চালু হয়। এটি ক্লাচ ছাড়াই আপশিফট করতে দেয়। যদিও লো স্পিডে একটু বিরক্তিকর, তবে হাই স্পিডে দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা দেয়।
প্রশ্ন ৮: পারফর্মেন্স কি তুলনামূলক ভালো?
VVA (Variable Valve Actuation) থাকার কারণে দ্রুত rpm ওঠে এবং ১০০ কিমি/ঘণ্টার উপরে গতি সহজেই পাওয়া যায়। টেস্ট রাইডে ১২৯ কিমি/ঘণ্টা তোলা গেছে। পাওয়ার ১৮.৬ps থেকে সামান্য কমে ১৮.৪ps হয়েছে এবং টর্ক ১৪.২Nm থেকে কমে ১৪.১Nm হয়েছে। ০-১০০ কিমি/ঘণ্টা তুলতে লাগে ১৩.২৫ সেকেন্ড। যদিও NS200 একটু দ্রুত (১১.৬৮ সেকেন্ড), তবে KTM RC 125 থেকে অনেক ভালো (১৮.২৪ সেকেন্ড)।
চূড়ান্ত মূল্যায়ন
কাগজে কলমে দাম কিছুটা বেশি হলেও ইঞ্জিন ক্ষমতা, পারফর্মেন্স ও নিরাপত্তা বিবেচনায় এটি যুক্তিসঙ্গত। উঠতি রাইডার বা রেস লাভারদের জন্য Yamaha R15 V4 একটি দুর্দান্ত পছন্দ।